বাবাকে নিয়ে আদালতে গিয়েছিলেন ওই ছাত্রী, ঠিক করেছেন আইনজীবী।
Published : 28 Feb 2023, 11:17 PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির জন্য আদালতে মামলা করবেন বলে নির্যাতিত ছাত্রী জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে ওই ছাত্রীর বাবা কুষ্টিয়ার বিচারিক হাকিম মাহমুদা সুলতানার আদালতে এসেছিলেন। এ সময় মেয়েও তার সঙ্গে ছিলেন।
তারা মামলার আইনি পরামর্শের জন্য আইনজীবী ঠিক করে কথা বলে বাড়ি ফিরেছেন।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রী বলেন, “স্যারেরা যে তদন্ত করেছেন, সেখানে প্রাথমিকভাবে আমার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলেই ইতোমধ্যে তাদের হল প্রশাসন হল থেকে বহিষ্কার করেছেন। সেজন্য আমি সর্বোচ্চ ন্যায়বিচার চাচ্ছি, যাতে আমার সাথে যা ঘটেছে এমন ঘটনা যেন দেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না হয়।
“আমি জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে আদালতে মামলা করব। আজ কুষ্টিয়ায় আদালতে গিয়েছিলাম, মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে লইয়ারের সঙ্গে কথা বলেছি।”
ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: ছাত্রলীগের ৫ জনের হলের সিট বাতিল
ফোনে ইবির নির্যাতিত ছাত্রীকে ‘ন্যায়বিচারের’ আশ্বাস ছাত্রলীগ সভাপতির
অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক বলেন, “শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী ইবি ছাত্রী এসেছিলেন, উনি মামলা করতে চান, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কথাবর্তা হয়েছে; তিনি আবার আসবেন।”
গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে রাত ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ইবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার নেতৃত্বে আরও কয়েকজন সহযোগীদের দ্বারা নবীন ওই ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতন এবং নির্যাতনের ঘটনা ভিডিও ধারণ করে নেটে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
পরদিন সকালে ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে যান ওই ছাত্রী।
পরে নির্যাতনের ওই ছাত্রী গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর ঘটনার বিবরণ দিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপাচার্য। এতে আইন বিভাগের অধ্যাপক রেবা মন্ডলকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কমিটি ১৮ ফেব্রুয়ারি কার্যক্রম শুরু করে। ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার শেষে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করা হয়।
যা যা ঘটেছে ছাত্রলীগকে সব বলেছি: ইবির নির্যাতিত ছাত্রী
ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন জমা
এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে নির্যাতনে অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীর স্থায়ী আবাসিকতা বাতিল করেছে হল কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ ছাড়া বুধবার এ সংক্রান্ত রিটের ওপর হাই কোর্টে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন বলেন, উপাচার্য ছুটিতে থাকায় তারা তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। উপচার্য ক্যাম্পাসে ফিরলেই তদন্ত সংশ্লিষ্ট সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এরই মধ্যে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পাঁচ ছাত্রীর স্থায়ীভাবে হলের আবাসিকতা বাতিল করেছে হল কর্তৃপক্ষ।