শুষ্ক মৌসুমে খালপাড় দিয়ে হেটে আর বর্ষায় নৌকায় যাতায়াত করেন বানারঝোড় গ্রামের বাসিন্দারা।
Published : 10 Apr 2025, 11:21 AM
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের বানারঝোড় গ্রামে এখনো সড়ক যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। পশ্চাদপদ এ গ্রামে যাতায়াতের ভরসা একটি খাল। শুষ্ক মৌসুমে খালপাড় দিয়ে হেটে আর বর্ষায় নৌকায় যাতায়াত করেন গ্রামের বাসিন্দারা।
কিন্তু এ খাল দখলে নিয়ে বালু ভরাট করেছেন দুই ভাই। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বানারঝোড় গ্রামের তিন হাজার মানুষ।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বানারঝোড় গ্রামবাসী।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বানারঝোড় গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র খালটি পাশ্ববর্তী টুঙ্গিপাড়া উপজেলার করফা গ্রামের প্রভাবশালী নূর ইসলাম শেখ ও তার ভাই সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রফিক শেখ দখল করে নিয়েছেন।
তারা ১ ভোল্ট স্লুইচ গেটের সামনের অংশে বালু ভরাট করেছেন। এতে গ্রামবাসীর চলাচল, পণ্য পরিবহন ও ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে।
এছাড়া দুই ভাইয়ের বাধার মুখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খাল খননের কাজও করতে পারেনি বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।
গ্রামবাসীর আশা প্রশাসন সরকারি এ খাল ‘ভূমিদস্যুদের কবল’ থেকে উদ্ধার করে তাদের যাতায়াতের পথ সুগম করবে।
বানারঝোড় গ্রামের বাসিন্দা শওকত মল্লিক বলেন, “আমোদের গ্রামে চলাচলের জন্য কোনো রাস্তা নেই। বর্ষার মৌসুমে আমরা নৌকায় ও শুকনো মৌসুমে এ খাল পাড় দিয়ে পায়ে হেটে চলাচল করি।
“কিন্তু এ খাল দখলে নিয়ে বালু ভরাট করা হয়েছে। তাই খালপাড় দিয়ে বালু ভেঙে চলাচল করা যাচ্ছে না। অন্যের জমির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
“এছাড়া গ্রামের মানুষ যেখানে নৌকা নোঙ্গর করে, সেই জায়গাও দখলে নিয়েছে দুই ভাই। এ কারণে নৌকায় চলাচল, পণ্য পরিবহন ও ব্যবসা বাণিজ্যে সমস্যা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “গ্রামের স্কুল-কলেজগামী ছেলে-মেয়েরাও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এছাড়া জরুরি রোগী পরিবহনে দেখা দিয়েছে অনিশ্চিয়তা। আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।”
কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তুষার মধু বলেন, “বানারঝোড় গ্রামবাসীর চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই খাল। সরকারিভাবে খালটি খনন করার জন্য ঠিকাদার কাজ শুরু করলে নূর ইসলাম শেখ ও তার ভাই রফিক শেখ বাধা দেয়। পরে ঠিকাদার কাজ না করে চলে যায়। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।”
এ বিষয়ে নূর ইসলাম শেখ বলেন, “আমি কোনো সরকারি খাল দখল করিনি। আমার নিজের জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করেছি। খাল খনন কাজেও আমি কোনো বাঁধা দেইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে।”
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মঈনুল হক বলেন, “আমরা গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”