একটা ডিমের দাম ১৩-১৪ টাকা হতে পারে না: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিদেশ থেকে আমাদের ডিম আমদানির দরকার নেই। এজন্য আমাদের একটু কষ্ট হবে, নইলে ডিম কম খাবো।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2022, 01:50 PM
Updated : 29 Sept 2022, 01:50 PM

একটি ডিমের দাম কিছুতেই ১৩-১৪ টাকা হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, “একটা ডিমের উৎপাদন করতে খরচ পড়ে ৫-৬ টাকা। এটা ৮ টাকা নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু ১৩-১৪ টাকা কেন হবে? এটা কি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না?”

সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণের কথা বলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, “বিদেশ থেকে আমাদের ডিম আমদানির দরকার নেই। এজন্য আমাদের একটু কষ্ট হবে, নইলে ডিম কম খাবো। এতে অনেকে দ্বিমত পোষণ করবে। তারপরও স্থানীয়ভাবে আমাদের ডিম উৎপাদন করে খেতে হবে।

“দেখা গেছে, যখনই বাজারে সরবরাহ কমে যায় তখন কিছু হ্যাচারি মালিক, ফার্মের মালিক নানা চক্রান্ত করে ডিমের দামটা বেশি নেয়। আবার বাজারে যখন ডিমের সরবরাহ বেড়ে যায় তখন কিন্তু তারা ষড়যন্ত্র করে ডিমের দাম বাড়ায় না। তাই ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের উচিত হবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের যারা দায়িত্বে রয়েছেন সবাই মিলে এটা কঠোরভাবে মনিটরিং করা। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা নিয়ে এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।”

মন্ত্রী বলেন, “আমি আগেও বলছি, এখনও বলছি। আমি জানি, এ নিয়ে সমালোচনা হবে। তারপরও বলবো, ডিম আমদানি করার দরকার নাই। আমাদের যে প্রযুক্তি আছে এবং বাণিজ্যিকভাবে আমাদের যে ফার্ম আছে, ইচ্ছা করলে ডিম দিয়ে বাংলাদেশ ভাসিয়ে দেওয়া যেতে পারে। ডিম আমদানি হলে আমরা আমদানি নির্ভর হয়ে যাবো। সেটা কি আমরা সাপোর্ট করি?”

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এ পর্যন্ত বিভিন্ন ফসলের অনেক উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। কিন্তু এসব প্রযুক্তির অধিকাংশই কৃষকের কাছে সেভাবে পৌঁছেনি। তাই দেশের কৃষির উন্নয়নে এসব জাত ও প্রযুক্তি দ্রুত সময়ের মধ্যে কৃষকের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।”

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. রুহুল আমিন তালুকদার, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহ, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুল গাফ্ফার খান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) মো. কামরুল হাসান। নিজেদের গবেষণা কার্যক্রম ও সাফল্য সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করেন বারির পরিচালক (গবেষণা) মো. তারিকুল ইসলাম।

এর আগে মন্ত্রী বারির কৃষি প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি ও ফসল প্রদর্শনীর স্টল ঘুরে দেখেন। এ সময় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষক ও কর্মকর্তারা ছিলেন।

বারির মহাপরিচালক জানান, এ কর্মশালার কারিগরি অধিবেশন আগামী ১৩ থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। বর্তমানে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে ২১১টি ফসল নিয়ে গবেষণা চলছে। ইতোমধ্যে বারি ৬২৫টি উচ্চ ফলনশীল জাত এবং ৬১২টি উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তিসহ মোট এক হাজার ২৩৭টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।