বগুড়ায় নৈশ প্রহরীকে মেরে হাত-পা ভাঙার অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে

এ ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করেছে; তবে সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি।

জিয়া শাহীনবগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2022, 05:31 PM
Updated : 23 Sept 2022, 05:31 PM

বগুড়া সদর উপজেলা প্রশাসনের এক নৈশ প্রহরীকে মারধর করে হাত-পা ভাঙার অভিযোগ উঠেছে ইউএনওর বিরুদ্ধে। 

সদর উপজেলায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে বলে আলমগীর হোসেন নামের ওই নৈশ প্রহরীর স্বজনদের অভিযোগ।

তবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সমর কুমার পাল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আলমগীর হোসেনকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সেখান থেকে তিনি না বলে চলে গেছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়।

আলমগীর বগুড়া সদর উপজেলা প্রকৌশলীর নৈশ প্রহরী হিসেবে কর্মরত আছেন।  

আলমগীরের ভগ্নিপতি মাসুদ রানা সাংবাতিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আলমগীরকে মারধর করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পালসহ কয়েকজন ফেলে রেখেছে – এমন খবরের ভিত্তিতে উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের কাছে ফোন দিলে তিনি তার গাড়িতে করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

“আমরা এর বিচার চাই। একজন বিসিএস ক্যাডারের লোক এমন করতে পারবে ভাবতেও পারিনি। অপরাধ করলে তার প্রশাসনিক ব্যাবস্থা নিতে পারতেন।”

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমাকে ফোন দিয়েছিল আলমগীরের পরিবারের পক্ষ থেকে। বলেছিল মারপিট করে তাকে ফেলে রাখা হয়েছে উপজেলা ক্যাম্পাসে। আমি গাড়ি পাঠিয়ে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি এবং নিজে খোঁজও নিচ্ছি। এত বড় একটা ঘটনা উপজেলা ক্যাম্পাসে নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে জানালও না।”

এ ব্যাপারে ইউএনও সমর কুমার পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আলমগীরের স্ত্রী মাঝেইমাঝেই অভিযোগ করে তাকে খরচ দেয় না, মারধর করে এবং উপজেলা পরিষদে এসে অবস্থান নেয়।

“সে প্রকৌশল অফিসে কাজ করে। গতকাল [বৃহস্পতিবার] তাকে ডেকে এনে বলা হয় – তোমার জন্য সবাই বিব্রত। পরে উপজেলা প্রকৌশলীকে বলি, ‘তোমার স্টাফ; বিষয়টি দেখ।”

ইউএনও আরও বলেন, তাকে সিরাজগঞ্জের গাড়িতে তুলে দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রকৌশলী নাকি চেষ্টা করেন। তবে তিনি না গিয়ে উপজেলা গেটের সামনে এসে শুয়ে পড়েন।

“শুনেছি সেখানে স্থানীয় দুইজন লোক এসে নাকি বলেছে – ইউএনও মেরেছে এ কথা বললে তোর কিছুই হবে না। তাই হয়তো-বা বলতে পারে। আসলে ভালো কাজ করছি; আমাকে সরিয়ে দিতে এর পিছনে কেউ থাকতে পারে।”

ইউএনও আরও বলেন, “মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ এনেছে আমার বিরুদ্ধে; তাহলে হাসপাতাল থেকে হাত-পা ভাঙা অসুস্থ লোকটি কেন, কীভাবে পালাল?”

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি হয়েছে, তদন্ত কমিটিই আসল ঘটনা উদ্ঘাটন করুক।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ- পরিচালক ডা. ওয়াদুদ হোসেন বলেন, রোগীর লোকজন দাবি করছিল তার হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। 

“আমরা উনার চিকেৎসার সকল ব্যবস্থা করেছিলাম। আজ শুক্রবার বন্ধের কারণে তাকে শনিবার এক্স-রে করা হবে বলা হয়েছিল। কিন্তু আজ দুপুরে রোগী পালিয়ে গেছে। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।”