যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ের কুকুর হত্যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ

বুধবার ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৮টি কুকুর ধরে মেরে ফেলা হয় বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2022, 10:39 AM
Updated : 30 Sept 2022, 10:39 AM

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকটি কুকুর হত্যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কুকুর হত্যার প্রতিবাদসহ বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন।

তবে প্রশ্সানের কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না। তারা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

জোবায়ের রনি নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তার ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, “দুর্বল, নিরীহ, অবলা প্রাণীদের মেরে কী বুঝাতে চাইলেন? আপনারা সর্বেসর্বা!!! কিন্তু আমরা জানলাম, আপনারা জ্ঞানহীন নিথর দেহরূপী হিংস্র মানুষ।”

রনি জানান, বুধবার ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৮টি কুকুর ধরে মেরে ফেলা হয়।

শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক কৃষ্ণ বালা জানান, মেরে ফেলা কুকুরগুলোর মধ্যে ‘ডেভিড’ নামে একটি কুকুর ছিল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের প্রিয়। তাকে হারিয়ে অনেকে ব্যথিত হয়েছেন।

তিনি বলেন, “কুকুর মারার আগে প্রশাসনের উচিৎ ছিল নোটিশ দেওয়া। তাহলে পোষা কুকুরগুলো রক্ষা পেতো।”

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মী মুন্সি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের তত্ত্বাবধায়নে বহিরাগত লোক দিয়ে বুধবার কুকুরগুলো হত্যা করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুন্সি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন. “ক্যাম্পাসের কিছু রুগ্ন-সুগ্ন কুকুর অপসারণের কথা ছিল। কিন্তু বুধবার আমি অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তবে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কিছু অজানা নই। কিন্তু কিছু বলার অথরিটি আমি না।” 

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ কমিটির প্রধান ও পরিবেশ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মৌমিতা চৌধুরী বলেন, “কুকুর নিধনের বিষয়টি আমার জানা নেই।”

খোঁজ নিয়ে জানানোর কথা বললেও তিনি আর ফোন ধরেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হাসান মোহাম্মদ আল ইমরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুধবার তিনি ছুটিতে ছিলেন। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন।

তিনি জানান, সম্প্রতি ক্যাম্পাসে কিছু কুকুর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। একজন আনসার সদস্যকে কুকুর কামড়ে দেয়। এ ছাড়া শিশুদের ধাওয়া করে। তবে কুকুর নিধনের কোনো সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়নি। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কমিটি যশোর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এত সংখ্যক (১৮টি) কুকুর নেই জানিয়ে ড. আল ইমরান বলেন, ফেইসবুকে যে ভিডিও চিত্র বা ছবি দেওয়া হচ্ছে তা হয়তো এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়।

এ বিষয়ে জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।