সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০৮ সালে কুতুবদিয়ায় বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলেও কার্যত তাতে সফলতা আসেনি।
Published : 13 Apr 2023, 07:24 PM
বঙ্গোপসাগর বেষ্টিত কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দ্বীপটিতে বিদ্যুৎ সংযোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক।
গত বুধবার থেকেই দ্বীপটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়।
এর মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতার ৫২ বছরে দ্বীপ উপজেলার মানুষ প্রথমবারের মতো জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুতের সুবিধা পেল।
‘হাতিয়া, নিঝুমদ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন' নামে একটি প্রকল্প ২০২০ সালে গ্রহণ করা হয়।
প্রকল্পটির পরিচালক ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ জানান, দ্বীপটিতে ১৯৮০ সাল থেকে জেনারেটরের মাধ্যমে সন্ধ্যায় কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর তাও বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্বল্প পরিসরে জেনারেটরের মাধ্যমে উপজেলা সদর ও এর কাছাকাছি এলাকায় সন্ধ্যার পর কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখে পিডিবি। ২০০৮ সালে কুতুবদিয়ায় বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলেও কার্যত তাতে সফলতা আসেনি।
এবার দ্বীপটিতে প্রথমবারের মত জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দেড় হাজার গ্রাহককে এ সুবিধা সরবরাহ করা হয়েছে। নতুন করে গ্রাহকদের আবেদন করতে বলা হয়েছে।
২০ হাজার গ্রাহককে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে বলেও জানান প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ।
ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ২১৫ দশমিক ৮০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় বর্তমানে দেড় লক্ষাধিক মানুষের বাস।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২০ সালে দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হাতিয়া, নিঝুমদ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন' প্রকল্পটির মেয়াদকাল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই দ্বীপটিতে পৌঁছে গেল জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক ফারুক আহমেদ আরও জানান, প্রকল্পের অধিনে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে কুতুবদিয়া। দ্বীপটিতে বিদ্যুৎ নিতে সাগরতলে দুই লেনে মগনামা থেকে গেছে দীর্ঘ ৬ কিলোমিটার ক্যাবল। দ্বীপটিতে ১২ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন উপকেন্দ্র, ৭২০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন হয়েছে।
এ ছাড়া প্রকল্পটির আওতায় নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপে তিনটি সাব স্টেশন নির্মাণ শেষ পর্যায়ে। হাতিয়া থেকে ১১ কেভি সাবমেরিন লাইনের মাধ্যমে নিঝুমদ্বীপে বিদ্যুৎ নেওয়া হবে।
বিদ্যুৎ সংযোগের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, “অসম্ভবকে সম্ভব করার জ্বলন্ত উদাহরণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যারা এ ধরনের প্রকল্পের কথা চিন্তাও করেনি, তা প্রধানমন্ত্রী বাস্তবায়ন করলেন। প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকতায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হল। কুতুবদিয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দ্বীপবাসীর জন্য একটি স্বপ্ন পূরণ।”
কুতুবদিয়াবাসীর পক্ষ থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।