হাসপাতালে নয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ভোরে তার মৃত্যু হয়।
Published : 02 Feb 2024, 04:22 PM
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত কলেজছাত্র চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
শুক্রবার ভোরের দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে বাসাইল পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রিন্স মাহমুদ জানান।
নিহতের স্বজনদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ওই কলেজছাত্র ২৪ জানুয়ারি থেকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। নয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ভোরে তার মৃত্যু হয়।
নিহত জিজান হাসান দীপ্ত (১৮) সখীপুর উপজেলার চাকদহ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম মল্লিকের ছেলে।
তিনি ঢাকার পিলখানায় অবস্থিত বীর শ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ থেকে ২০২৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। দীপ্ত মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
এ ঘটনায় দীপ্তর মা সোহেলী সুলতানা দিপা বাদী হয়ে ২৭ জানুয়ারি বাসাইল থানায় কিশোর গ্যাংয়ের হোতা বাসাইল থানাপাড়ার শাকিল আহাম্মেদ (২৫), বাসাইল শ্বশানঘটা এলাকার আলমগীর হোসেন (২৪), থানাপাড়ার স্বাধীন মিয়া (২০), মনা মিয়া (১৯), একই এলাকার অনিক মিয়া (১৯) ও রাহাত হাসান (২০), জিহাদ মিয়া (১৯), সীমান্ত মিয়ার (১৯) নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার পর পুলিশ ঘটনার হোতা শাকিল ও তার সহযোগী অনিক এবং আসাদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাসাইল থানার এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, শাকিল ও অনিককে গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি রাম দা ও লোহার পাইপে মোটরসাইকেলের চেইন প্রিমিয়াম ঝালাইযুক্ত দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
ওই দুজনের বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র আইনেও মামলা হয়েছে। বর্তমানে তিনজনই কারাগারে আছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, জিজান হাসান দীপ্ত গত ২৩ জানুয়ারি বাসাইল দক্ষিণপাড়া এলাকায় তার নানা রফিকুল ইসলামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ২৪ জানুয়ারি দুপুরে সমবয়সি বাসাইল উত্তরপাড়ার নাঈম ও সজল খানের সঙ্গে বাসাইল বাজারে যান।
মামলার নথি থেকে আরও জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে নাঈমকে কিশোর গ্যাংয়ের হোতা শাকিল বাসাইল বাজারের একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেন। এ সময় দীপ্ত ও সজল সেখানে ছিলেন।
এরপর সন্ধ্যায় আবার তারা তিনজন বাসাইল বাজারের দিকে যাওয়ার সময় মনি ক্লিনিকের সামনের মোড়ে শাকিলের নেতৃত্বে অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা চালান হয়। তখন নাঈম ও সজল প্রাণভয়ে দৌড়ে পালান।
এ সময় দীপ্তকে একা পেয়ে ধারালো দা, কাঠের স্ট্যাম্প, লোহার পাইপে মোটরসাইকেলের চেইন, প্রিমিয়াম ঝালাইযুক্ত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন আসামিরা। তখন স্থানীয়রা এগিয়ে এলে শাকিলসহ অন্যরা পালিয়ে যান।
পরে দীপ্তকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
বাসাইল থানার এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, “চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলেটি সকালে মারা গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে হোতা শাকিল ও অনিককে রিমান্ডে আনার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”