“দুইটি নৌকায় যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীদের থেকে চার-পাঁচ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে।”
Published : 10 Feb 2025, 12:59 AM
কুড়িগ্রামের চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের কড়াইবরিশাল নৌঘাটে দুটি নৌকায় ডাকাতি হয়েছে। এসময় আহত হয়েছেন একজন।
রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন চিলমারী মডেল থানার ওসি মুশাহেদ খান।
তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঘটনার সময় কিছুটা দূরে নৌ-পুলিশের নৌকা থাকলেও ঘটনার সময় তারা নির্বিকার ছিল।
আহত যাত্রী আমিনুল ইসলামকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি রৌমারী উপজেলার কোমরভাঙ্গি এলাকার বাসিন্দা।
ডাকাতির শিকার নৌকার মাঝি ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজিবপুরের কোদালকাটি ও পাখিউড়া থেকে চিলমারীর উদ্দেশে আসছিল দুটি নৌকা। মাঝপথে বেলা ১২টার দিকে নৌকা দুটি যাত্রী নেওয়ার জন্য কড়াইবরিশাল খেয়া ঘাটে ভিড়লে সেখানেই আক্রমণ করে সশস্ত্র ডাকাতদল।
তারা গুলি ছুঁড়ে নৌকায় থাকা যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ডাকাতদের ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী একটি নৌকার মাঝি মোসলেম উদ্দিন বলেন, “খেয়া ঘাটে গরু ব্যবসায়ীদের নৌকা ছিল। ওদের নৌকায় ডাকাতি করতে আইসা আমার নৌকাতেও ডাকাতি করে। ডাকাতরা ১০ থেকে ১৫ জন ছিল। দুই নৌকা থাইকা টাকা লুট কইরা ডাকাতরা চইলা যায়। আমরা কিছু করতে পারি নাই।”
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও বলেন, “ডাকাতরা একটা গুলি করছে। ওদের হাতে বেকিও ছিল। আমার কাছে তিন যাত্রীর ৫৭ হাজার টাকা আছিল। আমাক বারি (আঘাত) দিয়া সেটা কাইরা নিছে। কয়েকজন যাত্রীর কাছেও টাকা নিছে। গরুর ব্যাপারিগো কাছেও টাকা কাইরা নিছে। ওগো অনেকে পানিত লাফ দিছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “পাশেই পোশাক পড়া তিনজন পুলিশ আছিল। কিন্তু তারা আগায় আহে নাই।”
ইসহাক নামে এক নৌকা যাত্রী বলেন, “দুইটি নৌকায় যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীদের থেকে চার-পাঁচ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। পরে কাছে গিয়ে দেখি জীবন ও টাকা বাচাঁতে অনেকে পানিতে লাফ দিছে।”
কড়াইবরিশাল এলাকার বাসিন্দা আজম মিয়া জানান, গুলির শব্দ ও যাত্রীদের চিৎকারে ঘাটের কাছে থাকা স্থানীয় লোকজন এগিয়ে যান। তারা নৌকা নিয়ে ডাকাতদের ধাওয়া করেন। কিন্তু ততক্ষণে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। এসময় ঘাটে পুলিশের একটি নৌকা থাকলেও তারা যাত্রীদের সহায়তায় এগিয়ে যাননি।
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি কড়াইবরিশাল এলাকায় মরপশ্চিমে ব্রহ্মপুত্র নদে যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এছাড়া গত বছর ২১ ডিসেম্বর চিলমারীর অষ্টমীরচর ইউনিয়নের দুইশ বিঘার চরের কাছে নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
পরপর তিন দফা ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এই নৌপথে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ যাত্রী। পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো ঘটনারই কূল-কিনারা করতে পারেনি।
এ ঘটনায় চিলমারী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সেলিম সরকারকে ফোন দিলেও তিনি কথা বলেননি।
চিলমারী মডেল থানার ওসি মুশাহেদ খান বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। বিস্তারিত জেনে তারপর বলতে পারব।”
তিনি বলেন, “এর আগেও দুটি নৌ- ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ এখনো কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি।তাদের শনাক্তে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত আছে।”