“রাতে হঠাৎ আশপাশের মানুষ, ‘খুন হয়েছে’ বলে চিৎকার শুরু করে। তখন সেলুনে গিয়ে রুমের মেঝে রক্তে ভেসে গেছে দেখা যায়।”
Published : 03 Oct 2024, 03:40 PM
গাজীপুরের শ্রীপুরে সেলুনের ভেতর থেকে এক পোশাক শ্রমিকের গলাকাটা লাশ এবং পাশ থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তরপাড়া এলাকার একটি ভবনের দোতলায় ‘জেন্টস পার্লার’ নামের একটি সেলুন থেকে বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ওই মরদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান।
স্থানীয়রা বলেছেন, ওই সেলুনের মালিক ও নাপিত মো. খলিল মিয়া, ছাঈদকে সেলুনে নিয়ে ‘গলাকেটে হত্যা করে’ পালিয়ে গেছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় কয়েকজন তাকে আটকানোর চেষ্টা করলে তাদেরকে ‘অস্ত্রের ভয়’ দেখানো হয়।
নিহত ২৩ বছর বয়সী আবু ছাঈদ নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার আলমপুর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি মাওনা উত্তরপাড়া এলাকার বাবুল সরকারের বাড়িতে ভাড়া থেকে মেঘনা গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।
আর ছাঈদকে হত্যার অভিযোগের মুখে থাকা নাপিত ২৬ বছর বয়সী খলিল সিলেটের সদর উপজেলার মসজিদ কলোনি গোটাটিকর গ্রামের আব্দুল মজিদ মিয়ার ছেলে।
খলিল মাওনা উত্তরপাড়া এলাকার আবু হানিফ নামের এক ব্যক্তির দোতলা ভবনের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে সেলুনটি চালাতেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাশের ইব্রাহিমের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
নূরুল হক নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলছিলেন, “বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে আমরা কয়েকজন রাস্তার পাশে বসেছিলাম। তখন খলিলের সেলুন থেকে ধস্তাধস্তির শব্দ শোনা যায়। কিছুক্ষণ পর খলিলকে ‘রক্তাক্ত’ জামা-কাপড় পড়ে দ্রুত চলে যেতে দেখে আমাদের সন্দেহ হলে আমরা তাকে ডাক দেই।
“কিন্তু সে থামেনি। এরপর হাঁটার গতি আরও বাড়িয়ে দিলে আমরা দৌঁড়ে তার কাছাকাছি গেলে সে ‘অস্ত্রের ভয়’ দেখিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।”
দোকান মালিকের চাচা দেলোয়ার হোসেন ফেরদৌস বলেন, “দশ দিন আগে আমার ভাতিজার কাছ থেকে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে সেলুনের কাজ শুরু করে খলিল। বুধবার রাতে হঠাৎ করে আশপাশের মানুষ, ‘খুন হয়েছে’ বলে চিৎকার শুরু করে। পরে সেলুনে গিয়ে একটি রক্তাক্ত মরদেহ ও রুমের মেঝে রক্তে ভেসে গেছে দেখে থানায় খবর দেওয়া হয়।”
ওসি জয়নাল বলেন, “বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় খলিলের বাসায় যাতায়াত ছিল সাঈদের। এক পর্যায়ে খলিল সন্দেহ করেন, তার স্ত্রীর সঙ্গে সাঈদের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এর জেরে সাঈদকে সেলুনের ভেতরে ডেকে গলাকেটে হত্যার পর পালিয়ে যান খলিল।
“খুনি ধারালো ছুরি দিয়ে নিহতের গলার বেশিরভাগ অংশ কেটে ফেলেছে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাত করেছে। খুনি ঘটনার পরপরই পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে আমরা রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করেছি।”
নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর খলিলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।