মোটরসাইকেল কেনার জন্য ছবি ও ভোটার আইডিকার্ড প্রিন্ট করতে মোবারক পাশের একটি দোকানে গেলে শের আলী টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।
Published : 12 Feb 2024, 09:07 PM
নোয়াখালীতে আত্মগোপনে থেকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে প্রতারণার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, দেড় বছর আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। এ সময় অপহরণের মামলাও দায়ের করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
সোমবার দুপুরে নোয়াখালীর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি নাজিম উদ্দিন আহমেদ জানান, আগের রাতে কক্সবাজার পৌর বাস টার্মিনালের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিকালে নোয়াখালীর মুখ বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার ৩২ বছর বয়সী শের আলী জেলার কবিরহাট উপজেলার নলুয়া গ্রামের সামছুদ্দিনের ছেলে।
ঘটনার বর্ণনায় ওসি বলেন, চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালাতেন শের আলী। তার সঙ্গে নোয়াখালীর হাতিয়া বাজার এলাকার মোবারক নামের এক ব্যক্তির পরিচয় হয় এবং এক পর্যায়ে সখ্যতা গড়ে উঠে। ২০২২ সালের ২২ জুলাই মোবারক মোটরসাইকেল কিনতে শের আলীকে নিয়ে চট্টগ্রামের মৌলভী বাজারের একটি শোরুমে যান।
“মোবারক লুঙ্গি পরে যান। আর শের আলী প্যান্ট পরে যাওয়ায় মোবারক মোটরসাইকেল কেনার ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন তার কাছে রাখতে দেন।“
মোটরসাইকেল দরদামের পর রেজিস্ট্রেশনের জন্য ছবি ও ভোটার আইডিকার্ড প্রিন্ট করতে মোবারক পাশের একটি দোকানে গেলে শের আলী টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে যান বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর মোবারক ও তার বন্ধু ইউসুফ নিজ নলুয়া জনতা বাজারে স্থানীয় লোকজনকে বিষয়টি জানালে এনিয়ে সালিশ হয়। কিন্তু সেখানেও বিষয়টি অমীমাংসিত থাকায় স্থানীয়রা সমাধানের জন্য হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের শরণাপন্ন হন।
একই দিন মোবারক ও শের আলী হরণী ইউনিয়নের বয়ারচর বাজারে যান। সেখানে মোবারক শের আলীকে দোতলা বিল্ডিং এর একটি ঘরে রেখে চেয়ারম্যানকে আনতে গেলে এই সুযোগে শের আলী পালিয়ে যান।
পরে তার চাচা দেলোয়ার হোসেন বিটু শের আলী ও তার ছেলে মারুফকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগে শামছুল হক মাঝিসহ এলাকার আরও নয়জন এবং মোবারক ও তার বন্ধু ইউসুফের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১২ জুলাই আদালতে অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
আদালতের নির্দেশে কবিরহাট থানায় উক্ত বিষয়ে নিয়মিত মামলা রুজু হয়। এরপর পর কবিরহাট থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরবর্তীতে মামলার তদন্তভার ডিবি পুলিশে দেওয়া হয় বলে ওসি নাজিম জানান।
ওসি আরও বলেন, “শের আলী খুবই চুতর ও ধূর্ত। সে ঘন ঘন মোবাইল সিম পরিবর্তন করায় তার সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তার কল লিস্ট পর্যালোচনায় দেখা যায় সে ক্সবাজার, বান্দরবন, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।