বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে ঝালকাঠিতে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষ।
শনিবার সকাল থেকেই আকাশ ছেয়েছে কালো মেঘে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় জেলার সুগন্ধা, বিষখালি, হলতাসহ নদ-নদীগুলো ভয়ানক রূপ ধারণ করেছে।
এর আগে ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, বুলবুলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবারও ক্ষতির মুখে পড়ার শঙ্কায় ভুগছেন। বিশেষ করে সদর ও কাঠালিয়া উপজেলায় বিষখালি নদীর তীরে কোনো বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝুঁকিতে আছেন বাসিন্দারা।
কাঁঠালিয়া উপজেলার বিষখালি পাড়ের বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, “এই উপজেলাটি বঙ্গোপসাগর থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরবর্তী। যে কারণে বন্যা-ঝড়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি বারবার।
“এখন নদী পারের ১৫ গ্রামের মানুষ আতঙ্কের মধ্যে আছি। প্রস্তুতি নিয়েছি আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার।”
নদী তীরবর্তী মানুষ জানায়, বেড়িবাঁধ না থাকায় সিডরের সময় কাঠালিয়া উপজেলায় প্রাণহানিসহ প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
এ ছাড়া ঝালকাঠি সদরের কিছু অংশে বেড়িবাঁধ থাকলেও তা সংস্কারের অভাবে ধসে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ স্বাভাবিক জোয়ারের পানিও ফসলি জমিতে প্রবেশ করে।
জেলা শহরের সুগন্ধা পাড়ের গুরুধাম এলাকার আব্দুল মোত্তালিব (৫৫) বলেন, “প্রতি বছরেই আমরা বন্যা-ঝড়ে ভাসি। বন্যার সাথে নদী ভাঙনে আমরা সর্বস্ব হারাচ্ছি। ৫০ বছর ধরে সুগন্ধা নদীর এই এলাকাটি ভাঙনে বিলীন হতে চলছে। সম্প্রতি নামমাত্র জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে এখানে। ”
এ দিকে দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে জানিয়ে
জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে ৬১ সাইক্লোন শেল্টারসহ দুই শতাধিক স্কুল-কলেজ। ৩২টি ইউনিয়নের জন্য ৩২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত শুকনো খাবারও মজুত রাখা হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে উপকূলের মানুষকে নিরাপদে থাকার জন্য সতর্ক ও আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।