“এক ঘণ্টার বেশি বসে আছি। ফেরিতে উঠতে আরও ঘণ্টা দুই সময় লাগবে। ভোগান্তির মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে ঝুম বৃষ্টি।“
Published : 02 Jul 2023, 08:06 PM
ঈদের ছুটি শেষে গ্রাম থেকে নগরে ফিরছে মানুষ। মহাসড়কে যানজট, অসহনীয় গরমের ভোগান্তি না থাকলেও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।
রোববার সকাল থেকে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ না থাকলেও দুপুরের পর থেকে চাপ বাড়তে থাকে। বিকাল ৩টার পর থেকে ঘাট এলাকায় যানবাহনের লম্বা লাইন হতে থাকে। এতে ভোগান্তিতে পরে চালক ও যাত্রীরা।
তবে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে এই নৌপথে ১২টি ছোট-বড় ফেরি চলাচল করছে বলে জানান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ।
তিনি আরও বলেন, “ঈদের ছুটি শেষে যাত্রীবাহী পরিবহনের অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। তবে যানবাহন নদী পারাপার করার জন্য সব প্রস্তুতি রয়েছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি ফেরি রয়েছে। ছোট-বড় ১২টি ফেরি চলাচল করছে। যানবাহনের চাপ বাড়লে প্রয়োজনে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে।”
সরজমিনে বিকালে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষ ও যানবাহনের চাপ রয়েছে। ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দেড় কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের সারি রয়েছে ফেরি পারের অপেক্ষায়। প্রতিটা যানবাহনকে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস পূর্বাশা পরিবহনের যাত্রী নার্গিস পারভীন বলেন, “ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরছি। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসে জ্যামে আটকে গেছি। কখন ফেরিতে উঠতে পারবো জানি না। দেড় ঘণ্টার বেশি বাসে বসে আছি। ছোট বাচ্চাটা নিয়ে আরও বেশি কষ্ট হচ্ছে।”
কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা রাজধানী পরিবহনের যাত্রী সোলেমান মোল্লা বলেন, “ঈদে স্বস্তিতে বাড়িতে গেলেও কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে ভোগান্তি নিয়ে। ফেরি ঘাটে এসে আটকে গেলাম।
“এক ঘণ্টার বেশি সময় বসে আছি। এখন বাস যেখানে আছে সেখান থেকে ফেরিতে উঠতে আরও ঘণ্টা দুই সময় লাগবে। এ ছাড়া ভোগান্তির মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে ঝুম বৃষ্টি।“
চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা পূর্বাশা পরিবহনের আরেক যাত্রী তানিয়া আক্তার বলেন, “পদ্মা সেতু চালুর পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় কোনো ভোগান্তি ছিলো না। ঈদে কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়া ফেরিতে উঠে নদী পর হয়ে বাড়িতে গিয়েছি।
“এখন ফেরার পথে ঘাট এলাকায় দেখছি যানজট। দেড় ঘণ্টার বেশি হলো বাসে বসে আছি। একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম, জ্যামের কারণ কী? তিনি বললেন, ফেরি কম চলছে তাই।”
ফরিদপুর থেকে আসা মোটরসাইকেল আরোহী মাসুদ রানা বলেন, “ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছি। পথে কোনো ভোগান্তি নেই। তবে বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।”
যাত্রীবাহী বাস দর্শনা ডিলাক্সের দৌলতদিয়া ঘাট সুপারভাইজার নুরুল ইসলাম নুরাল বলেন, “পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপার শুরু হওয়ার পর এই ঘাটে আর কোনো প্রকার দুর্ভোগ হয় না। তবে ঈদের ছুটি শেষে কিছু যাত্রী ও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ পরেছে। যে কারণে ফেরি ঘাটে কিছু গাড়ি দেখা যাচ্ছে।”
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ব্যবস্থাপক নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, “যাত্রীদের চাপ আছে। তবে দুর্ভোগ নেই। কিছুটা দুর্ভোগ হচ্ছে অতিরিক্ত বৃষ্টি আর প্রচন্ড গরমে। তা ছাড়া যাত্রীরা সহজে লঞ্চ পার হয়ে গন্তব্যে যেতে পারছে। এই নৌপথে বর্তমান ১৮টি লঞ্চ চলাচল করছে।“