হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আইসিইউ এবং সিসিইউ ইউনিট নির্মাণ করা হয়।
Published : 05 May 2024, 07:37 PM
শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট-আইসিইউ ও করোনারি কেয়ার ইউনিট-সিসিইউ জনবলের অভাবে এখনও চালু হয়নি। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি; সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার প্রায় ১৮ লাখ মানুষ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, বারবার লোকবলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হলেও কোনো লোকবল পাওয়া যাচ্ছে না।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, কোভিডের সময়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আটতলা ভবনের উপরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আইসিইউ এবং সিসিইউ ইউনিট নির্মাণ করা হয়েছে।
দুই কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিটের জন্য ভেন্টিলেটর, ১০টি করে দুই ইউনিটের জন্য ২০টি বেডসহ সব ধরনের যন্ত্রপাতি দিয়ে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আইসিইউ ও সিসিইউ সাজানো হয়। কিন্তু কেবল জনবলের অভাবে তা চালু করা যাচ্ছে না।
হাসপাতালের ওই দুই ইউনিট ঘুরে দেখা যায়, ইউনিটের ভেন্টিলেটর, শয্যাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতিতে বাইরের ধুলো-বালির আস্তর পড়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিটের ভবনের বাথরুমসহ বিভিন্ন দরজা-জানালাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম জন উদ্যোগের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “সবকিছু সাজানো-গোছানোর পরও এই ইউনিট দুটি চালু না হওয়ায় নেশাখোরদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে এবং তারা ভবনের ভেতরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি চুরি করেও নিয়ে যাচ্ছে। তাই হাসপাতালে এই আইসিইউ ইউনিট দুটি দ্রুত চালু করার জন্য জেলার সচেতন বিভিন্ন মহল জোর দাবি জানাচ্ছি। ”
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাস্থ্য সেবার দিক দিয়ে ভৌগোলিক কারণে দেশের মধ্য উত্তর সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জেলার পাঁচটি উপজেলা ছাড়াও পাশের জামালপুর জেলার দুইটি এবং কুড়িগ্রাম জেলার আরও দুইটি উপজেলাসহ মোট নয়টি উপজেলার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে থাকেন এই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, হাসপাতালটি ২০১৮ সালে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতাল হিসেবে উন্নীত করা হয়। কিন্তু ২৫০ শয্যা হলেও চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য লোকবল রয়েছে সেই ১০০ শয্যারই। নতুন করে আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিট চালু করতে হলে ছয় জন কনসালটেন্ট, ১২ জন মেডিকেল কর্মকর্তা, ৩০ জন নার্স, ১২ জন ওয়ার্ড বয়, ছয় জন স্ট্রেচার বেয়ারার, তিন জন ল্যাব টেকনিশিয়ান, দুই জন আইসিইউ টেকনিশিয়ান এবং ছয় জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী প্রয়োজন।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, “লোকবল না থাকায় এই ইউনিট দুটি আজও চালু করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা লোকবল চেয়ে বার বার চিঠি দিয়ে যাচ্ছি।”
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন আশা এই চিকিৎসকের।