“নতুন করে ঘরবাড়ি তোলার মত জমি নেই আমাদের। সে কারণে আপাতত ঘরবাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে বিদ্যালয় মাঠে রেখেছি।”
Published : 11 Jul 2024, 09:02 PM
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তার ভাঙনে প্রায় শতাধিক বসতভিটা-আবাদি জমি বিলীন হয়ে গেছে।
যে যেভাবে পারছেন অবশিষ্ট শেষ সম্বল বাড়িঘর, আসবাবপত্র, গবাদিপশু কিংবা গাছপালা বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
গত কয়েকদিনে উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর ডাউয়াবাড়ি ও কিসামত ডাউয়াড়ির শতাধিক বাড়িঘর নিশ্চিহ্ন হয়েছে। প্রায় ১০০ একর আবাদি জমি নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে।
সরেজনিনে দেখা যায়, মঙ্গলবার থেকে পানির তোড়ে উত্তর ডাউয়াবাড়ির রাস্তা ভেঙে নদীর পানি বয়ে চলছে। অনেকের বসতবাড়ির মাঝখান দিয়ে বইছে তিস্তার পানি ঢল। চোখের সামনেই উপড়ে ভেসে যাচ্ছে বড় গাছপালা, ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি।
লোকজন যে যেভাবে পারছেন নিজেদের ঘর-আসবাবসহ নিজেদের সহায়-সম্পদের যতটুকু বাঁচাতে পেরেছেন তা নিয়ে নৌকায় অনেক দূরে সরে যাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার ওই এলাকার অন্তত ৪০টি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আর গত চারদিনে উত্তর ডাউয়াবাড়ি ও কিসামত ডাউয়াবাড়ির বিলীন হয়েছে শতাধিক বসতবাড়ি।
এ ছাড়া অন্তত ১০০ একর আবাদি জমিও নষ্ট হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে উত্তর ডাউয়াবাড়ির ৪৮ নম্বর ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক ও একটি মসজিদ।
উত্তর ডাউয়াবাড়ি গ্রামের নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত নজরুল ইসলাম বলেন, “চোখের সামনে গ্রামের একের পর এক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। একটি বাড়ির অনেক জিনিসপত্র থাকে। এসব সড়িয়ে নিতেও সময় ও লোকের দরকার। কিন্তু দুর্গম চরে কাজের মানুষ না পাওয়ায় সেগুলো সরিয়ে নিতে চরম কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “নতুন করে ঘরবাড়ি তোলার মত জমি নেই আমাদের। সে কারণে আপাতত ঘরবাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে বিদ্যালয় মাঠে রেখেছি।”
ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, “গত তিন দিনে প্রায় একশটি বাড়ি ভাঙনের কবলে পড়েছে। একই সঙ্গে ১০০ একর আবাদি জমিও নষ্ট হয়েছে। বারবার যোগাযোগ করেও অর্থ সংকটের কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিওব্যাগ সরবরাহ করতে পারেনি।”
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের-পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, “বিষয়টি এর মধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, “পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন প্রতিরোধে বিভিন্ন ধরনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাশে দাঁড়াচ্ছে।”