এ সময় অনেক শিশু-কিশোরকে খেলার মাঠের জন্য কাঁদতে দেখা যায়।
Published : 17 Aug 2024, 09:24 PM
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার জয়পুর গ্রামের সাঁওতালদের একটি স্কুল ও খেলার মাঠ মাদক ব্যবসায়ী এবং ভূমিদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাঁওতাল শিশু-কিশোর ও এলাকার লোকজন শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার পর্যন্ত ওই মাঠের চারপাশে ‘আদিবাসী সাঁওতাল শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী’র ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করে।
সকাল থেকে সাঁওতাল পল্লির শতাধিক নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর ও শিক্ষার্থী ওই খেলার মাঠে সমবেত হয়। পরে তারা মাঠের চারপাশ ঘুরে বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর ওই মাঠেই মানববন্ধন করে। এ সময় অনেক শিশু-কিশোরকে খেলার মাঠের জন্য কাঁদতে দেখা যায়।
মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন- অভিভাবক ও সাঁওতাল নেতা ডা. ফিলিমন বাস্কে, সুফল হেমব্রম, রাফায়েল হাসদা, বার্নাবাস টাডু, স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুর রহমান, ময়নুল ইসলাম, সাঁওতাল শিক্ষার্থী বিশপ মুরমু, সুমিত্রা মুরমু, শান্ত্বনা হাসদা, সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা।
ফিলিমন বাস্কে বলেন, “সন্তানদের নিজ মাতৃভাষায় লেখাপড়ার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সহযোগিতায় স্থানীয় সাঁওতাল পরিবারের সদস্যরা ‘শহিদ শ্যামল-রমেশ-মঙ্গল মার্ডি সাঁওতাল স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই স্কুলে তারা তাদের মাতৃভাষায় পড়াশুনার পাশাপাশি ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা করে আসছিল। এ ছাড়া ওই স্কুলের পাশেই আছে একটি খেলার মাঠ। সেই মাঠে সাঁওতাল শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করে।
“কিন্তু সম্প্রতি কিছু মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যু স্কুল এবং মাঠটি দখল করে নেয়। স্কুল ও মাঠ হারালে সাঁওতাল শিশু-কিশোররা খেলাধুলা ও মাতৃভাষায় পড়াশুনা এবং ভাষা-সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ হারাবে।”
সাঁওতাল নেতা রাফায়েল হাসদা, স্কুল ও মাঠটি উদ্ধার এবং মাদক ব্যবসায়ী-ভূমিদস্যুদের বিচারের দাবি জানান।
সাঁওতাল শিশু সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা বলে, “সমতলের আদিবাসীরা আজ বিলুপ্ত হওয়ার পথে। শুধু আদিবাসীই বিলুপ্ত হচ্ছে না, তাদের সংস্কৃতি ও ভাষাও বিলুপ্ত হচ্ছে। তাই এই স্কুল ও মাঠটি উদ্ধার না হলে সাঁওতালদের ভাষা ও সংস্কৃতি আরও বিপন্ন হবে।”