এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, এখানে গ্যাস পাওয়া গেলে তাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি এলাকারও উন্নয়ন হবে।
Published : 30 Oct 2022, 04:33 PM
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চামটা ইউনিয়নের দিনারা গ্রামে গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খননের জন্য চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, এখানে গ্যাস পাওয়া গেলে তাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি এলাকারও উন্নয়ন হবে।
৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। গত বৃহস্পতিবার সেখানে বিজয়-১০ নামে খনন যন্ত্রটি বাসানো হয়েছে।
বাপেক্সের মহাপরিচালক ও শরীয়তপুর তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্প-১ এর প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. তোফায়েল উদ্দিন সিকদার বলেন, “নভেম্বর মাসের দিকে কূপ খনন কাজ শুরু করব। খনন কাজ শুরু হলে চার মাস সময় লাগবে শেষ করতে।
“তিন হাজার ২০০ মিটার পর্যন্ত খনন কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে; এর কম-বেশিও হতে পারে। খনন কাজের প্রস্তুতি ৭০ ভাগ হয়ে গেছে। অনেক যন্ত্রপাতি আসছে এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আসতে শুরু করেছে।”
শরীয়তপুর অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্প-১ এর ড্রিল ইনচার্জ মুজাহিদ বিন হাফিজ জানান, বিজয়-১০ নামে যন্ত্রটি দুই হাজার অশ্ব ক্ষমতাসম্পন্ন। পাঁচ হাজার মিটার পর্যন্ত গভীরে খনন করতে পারবে।
বাপেক্স ও শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মেঘনা নদীর তীরবর্তী শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি থেকে খুলনা পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে দ্বি-মাত্রিক ভূ-কম্পন সমীক্ষা (টু-ডি সিসমিক জরিপ) করা হয়। ওই জরিপে দিনারা গ্রামে প্রাথমিকভাবে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
দেড় বছর মেয়াদী প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে গত বছর জুলাই মাসে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ছয় দশমিক ৪৯ একর জমির হুকুম দখল নেওয়া হয়েছে। ওই জমিতে থাকা ফসলের দুই বছরের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
এখানে গ্যাস পাওয়া গেলে এবং উত্তোলন সম্ভব হলে ওই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় দোকানদার রশিদ সরদার, ব্যবসায়ী আমির হোসেন, আলমগীর মিয়া।
দোকানদার রশিদ সরকার বলেন, “আগে আমার দোকান ছিলো গ্রামের ভিতরে; দৈনিক এক থেকে দেড় হাজার টাকা বেচাকেনা হতো। আগে এখানে কোনো রাস্তা ছিল না। গ্যাস প্রকল্পের জন্য রাস্তা হয়েছে, তার পাশেই দোকান দিয়েছি। এখানে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বেচাকেনা হয়। গ্রাম জুড়ে উন্নয়ন হয়েছে মানুষেরও যাতায়াত বেড়েছে।“
জমিদাতা বারেক মিয়া বলেন, “আমাদের জমিতে গ্যাসের কূপ হচ্ছে। এখানে গ্যাস পাওয়া গেলে দেশের জন্য মঙ্গল। গ্রামের উন্নয়ন হয়েছে। প্রকল্পে আমরা যারা জমি দিয়েছি তাদের ছয়জন ছেলে এখানে কাজ করছে। গ্যাস পাওয়া গেলে আরও অনেকের কর্মসংস্থান হবে।