মৌসুমের সর্বোচ্চ ১০১ জন রোগী ভর্তি হয় ২৮ সেপ্টেম্বর।
Published : 03 Oct 2024, 09:08 PM
বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যার সঙ্গে রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের দুইটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ছয় সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর।
এছাড়াও পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন গলাচিপা পৌরসভার বাসিন্দা মো. মনির হোসেন (৫০)।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য মতে- সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। মৌসুমের সর্বোচ্চ ১০১ জন রোগী ভর্তি হয় ২৮ সেপ্টেম্বর। সেদিন দুই জনের মৃত্যু হয়। ১ অক্টোবর ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৯৯ জন।
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “বৃষ্টি বাড়লেই আতংকিত হয়ে পড়ি। কারণ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হয়। তখন মশার বিস্তার বেড়ে যায়। এতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।”
তিনি বলেন, “সরকারি হাসপাতালে যত রোগী ভর্তি হয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। কারণ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে ভর্তি হওয়াসহ অনেক রোগী বাসা বাড়িতেও চিকিৎসা নেয়। সেই সংখ্যা আমাদের কাছে নেই। সেই সংখ্যা থাকলে সবাই বুঝতো ডেঙ্গু কত ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।”
প্রতিরোধ ছাড়া কোনো উপায় নেই জানিয়ে পরিচালক বলেন, “আমাদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার মতো সামর্থ্য রয়েছে। তবুও প্রতিরোধে এগিয়ে আসাই উত্তম।”
তিনি বলেন, “বৃষ্টি হলে যেখানে পানি জমে, সেখানে মশার আবাসস্থল হয়ে উঠে। মশার বিস্তার যেন না ঘটে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ঘুমানোর আগে অবশ্যই মশারী টানাতে হবে।”
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ১১ জন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ৯ জন পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ভোলা জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ জন, বরিশালে ১৩, পটুয়াখালীতে ১৯, পিরোজপুরে ৮ জন, বরগুনায় ২৩ জন ও ঝালকাঠিতে ৪ জন রয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের হাসপাতালগুলোতে তিন হাজার ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৭৫০ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৭৬ জন।
এখন পর্যন্ত গোটা বিভাগে ১৯ জন ডেঙ্গুরোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ জন, বরগুনায় দুইজন, পটুয়াখালীতে দুইজন, পিরোজপুর ও ভোলাতে একজন করে মারা গেছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে জেলা সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা হয়েছে।
সভায় জানানো হয়, ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে সকলের সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। সেই সাথে মশা জন্ম নিতে পারে এমন সব জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সভা থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডেকেল কলেজসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানানো হয়।