প্রায় দুই দশক তিনি পলাতক ছিলেন।
Published : 03 Sep 2022, 04:43 PM
ব্যবসায়ী সাব্বির আলম খন্দকারসহ চার খুনের আসামি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানকে প্রায় দুই দশক পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরিচয় গোপন রেখে তিনি সেখানে বসবাস করছিলেন।
নব্বইয়ের দশকে জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজ থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে আসা জাকির হোসেন একসময় শহরের ‘ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তিনি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হন। ২০০৩ সালের বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের ভাই সাব্বির আলম খন্দকার হত্যার পর আসামি হিসেবে নাম এলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, সাব্বির হত্যা মামলার পর জাকির থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। পলাতক থাকা অবস্থাতেই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় আদালত সাজা প্রদান করে। এরপর থেকে তিনি আর দেশে ফেরেননি। এক বছর আগে ভারত হয়ে দেশে ফিরে আসেন।
জাকিরের নামে চারটি হত্যা মামলাসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে উল্লেখ করে র্যাব জানায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকায় বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী ও মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন জাকির খান। দেওভোগ এলাকার অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে শহরের সোনার বাংলা মার্কেটের পেছনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে শহরের ত্রাস হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী।
“জাকির খানের বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে সন্ত্রাসমূলক অপরাধ দমন বিশেষ আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় তার ১৭ বছরের সাজা হয়। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে তার সাজা কমে আট বছর হলেও তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে দেশে ও বিদেশে প্রায় দুই দশক পলাতক ছিলেন।
জাকিরের কাছ থেকে একটি বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে, যার কোনো লাইসেন্স নেই বলে র্যাব অধিনায়ক জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, জাকির খানের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মী জানান, ১৯৮৯ সালে জাতীয় পার্টির স্থানীয় একজন প্রভাবশালী নেতার হাত ধরে জাকির জাতীয় ছাত্র সমাজে যোগ দেন। ওই নেতার সঙ্গে বিরোধের জেরে ১৯৯৪ সালে তিনি ছাত্রদলে যোগ দেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর জাকির জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হন। তখন শহরের ডিআইটিতে তাকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক দফা জেলও খাটেন তিনি।
দেশে না থাকলেও অনুসারীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছিল জাকির খানের। তাকে গ্রেপ্তারের পর অনেকেই ফেইসবুকে মুক্তির দাবি তুলে পোস্ট দিয়েছেন।