আশুলিয়ায় আবারও সিলিন্ডারের গুদামে বিস্ফোরণ, শিশুসহ দগ্ধ ৫

গুদামটিতে গ্যাসের সিল্ডিন্ডার মজুদের পাশাপাশি বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে গ্যাস রিফিলও করা হতো।

সাভার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2023, 11:14 AM
Updated : 13 May 2023, 11:14 AM

সাভারের আশুলিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডারের গুদামে বিস্ফোরণে অন্তত পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন; এদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে।

শনিবার সকালে ফ্যান্টাসি কিংডম সংলগ্ন তেঁতুলতলা এলাকার একটি টিনসেড গুদামে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর ওয়ালি উল্লাহ।

এতে দগ্ধ হয়েছেন গুদামের মালিক বেলাল মিয়া (৪০), কর্মচারী মো. নুরন্নবী (২০), মাহবুব (৩৫), শরিফুল (৩২) এবং শরিফুলের ৯ বছর বয়সী সন্তান সোহাগ। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন এসএম আইউব হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দগ্ধ পাঁচজনের অবস্থাই আশংকাজনক। তাদের প্রত্যেকের শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ।

এদের মধ্যে শরিফুলের শরীরের ৯৮ শতাংশ, সোহাগের ২০ শতাংশ, বেলালের ৩৬ শতাংশ, নুরন্নবীর ৪৩ এবং মাহবুবের ২৬ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানান এই চিকিৎসক।

এর আগে, ৪ মে ভোর ৬টার দিকে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার শিকদার পাড়া মহল্লার মো. মিরাজের ভাড়া নেওয়া টিনসেড সিলিন্ডার গুদামে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের বাড়িঘড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পুড়ে যায় বিদ্যুৎ লাইন, পানির ট্যাংকি, গাছসহ নানা কিছু। খসে পড়ে বাড়ির ছাদের ও দেয়ালের পলেস্তারা।

ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর জানান, গুদামটিতে গ্যাসের সিল্ডিন্ডার মজুদের পাশাপাশি অবৈধভাবে বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে গ্যাস রিফিলও করা হতো। সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর সেখানে আগুন ধরে যায়। এতে গুদামটির দেয়াল ধসে পড়ে।

তিনি বলেন, “খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।”

বিস্ফোরণে সিলিন্ডার গুদামের মালিক বিল্লাল ও তার দুই কর্মচারীসহ পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন জানিয়ে ওয়ালিউল্লাহ বলেন, দগ্ধদের প্রথমে স্থানীয় নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ঢামেকের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করেন।

তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, আবাসিক এলাকার মধ্যেই বাসা ভাড়া নিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ ও রিফিল করা হতো। এটি বিল্লালের গুদাম নামে পরিচিত ছিল। এ ছাড়া আশপাশে এমন অনেক গুদাম রয়েছে যেখানে রাতের আঁধারে রিফিলও করা হয়।

জামগড়া এলাকার এক সিলিন্ডার ব্যবসায়ী জানান, অবৈধভাবে তিনিও একসময় রিফিল করতেন। কিন্তু বিস্ফোরণের ভয়ে রিফিল ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন।

তবে জামগড়া এলাকায় অর্ধশত সিলিন্ডার মজুদের গুদাম রয়েছে বলে জানান এ ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, এসব গুদামে গ্যাস রিফিলও করা হয়। এ এলাকায় লালন, করিম, বাদল, খোকন, বিল্লাল, বেলালসহ বিভিন্ন ব্যক্তি সিলিন্ডার মজুদের গুদামের পাশাপাশি গ্যাস রিফিলও করেন। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই সিলিন্ডার মজুদ করে রিফিল করছেন তারা।