লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসবে পুণ্যার্থীদের ঢল, নদে ডুবে শিশুর মৃত্যু

ব্রহ্মপুত্র নদের ১৯টি ঘাটে এবার ১০ থেকে ১২ লাখ পুণ্যার্থী স্নানোৎসবে অংশ নেন।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে দু’দিনব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব শেষ হয়েছে৷ স্নানোৎসব চলাকালে নদে ডুবে মারা গেছে এক শিশু। 

লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদ্‌যাপন কমিটি জানিয়েছে, সোমবার বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে স্নানোৎসবের লগ্ন শুরু হয়। চলে মঙ্গলবার ৪টা ৫৫মিনিট পর্যন্ত।

লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি সরোজ সাহা জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের ১৯টি ঘাটে এবার ১০ থেকে ১২ লাখ পুণ্যার্থী স্নানোৎসবে অংশ নেন। দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত ছাড়াও ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভূটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকেও পুণ্যার্থীরা এসেছেন।

আয়োজকরা জানান, মন্ত্রপাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরীতকী, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পুণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নেন। লগ্ন শুরুর পরপরই পুণ্যার্থীর ঢল নামে লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। নারীদের কাপড় বদলানোর জায়গা ও বিশুদ্ধ খাওয়ার পানিসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে মায়ের সঙ্গে স্নান করতে ব্রহ্মপুত্র নদে নেমে মারা গেছে এক শিশু। ৯ বছর বয়সী রাজদ্বীপ চট্টগ্রামের পটিয়ার এলাকার উজ্জ্বল দাসের ছেলে।

কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক হাবিবুল্লাহ জানান, শিশু রাজদ্বীপ মঙ্গলবার দুপুরে মা প্রিয়াঙ্কা দাস, খালা ও নানির সাথে রাজঘাট এলাকায় পুণ্যস্নান করতে নামে। এ সময় রাজদ্বীপ মায়ের হাতছাড়া হয়ে গেলে পানির নিচে তলিয়ে যায়।

পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাজদ্বীপকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, স্নান উপলক্ষে লাঙ্গলবন্দে তিন স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর৷

স্মানোৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তায় পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশসহ দেড় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিল বলে জানান নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘খ’ সার্কেল) শেখ বিল্লাল হোসেন।

তিনি বলেন, তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৫০টির অধিক সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ৭টি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে জেলার ট্র্যাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ মোতায়েন ছিল। ব্রহ্মপুত্র নদে নৌ-পুলিশ কাজ করেছে।