“স্থানীয় ভাষায় এটিকে ভোল মাছ বলা হয়। কিন্তু এর বৈজ্ঞানিক নাম রেইয়ামেস বোলা।”
Published : 16 Feb 2025, 05:36 PM
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় জেলের টানা জালে ধরা পড়ল ১৯৪ কেজি ওজনের একটি ভোল মাছ।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ ঘোলার চর এলাকার নাফ নদীতে এই মাছটি ধরা পড়ে।
শাহপরীর দ্বীপ কোনা পাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা কালু ফকিরের মালিকানাধীন টানা জালে ভোল মাছটি ধরা পড়ে। স্থানীয় ভাষায় এই মাছটি ভোল মাছ নামে পরিচিত।
শাহপরীর দ্বীপ ট্রলার মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হাসান বলেন, “সকালে ওই এলাকায় নাফ নদীর মোহনায় মাঝি নুর মোহাম্মদসহ অন্যান্য জেলেরা টানা জাল ফেলেন। ঘণ্টাখানেক পর জাল টানার চেষ্টা করে জেলেরা। এমন সময় ছোট ছোট মাছের সঙ্গে এই বড় ভোল মাছটি জালে আটকে যায়।
“পরে জেলেরা নাফ নদী থেকে বড় মাছটি রশি বেঁধে টেনে টেনে চরের উপরে তুলে নিয়ে আসেন। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মাছটি শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে নেওয়া হয়। ওই সময় মাছটি দেখতে ভিড় জমান সাধারণ মানুষজন।”
মাঝি নুর মোহাম্মদ বলেন, “জালে প্রথম বার ১৯৪ কেজি ওজনের বড় ভোল মাছ আটকা পড়েছে। মাছটি শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে এনে মাছটির দাম হাঁকানো হয়েছিল তিন লাখ টাকা। পরে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী নুরুল আলমকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বিক্রি করেছি।”
মাছ ব্যবসায়ী নরুল আলম বলেন, “শাহপরীর দ্বীপে প্রথমবারের মত এত বড় ভোল মাছ ধরা পড়েছে। গত বছরে এমন সময় সেন্টমার্টিন দ্বীপে ১৫০ কেজি ওজনের একটি ভোল মাছ ধরা পড়েছিল। আগামীকাল সকালে টেকনাফ পৌরসভার মাছ বাজারে মাছটি কেটে কেটে কেজিতে বিক্রি করা হবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, “শাহপরীর দ্বীপের এক জেলে জালে একটি বিশাল মাছ ধরার খবর শুনেছি। স্থানীয় ভাষায় এটিকে ভোল মাছ বলা হয়। কিন্তু এর বৈজ্ঞানিক নাম রেইয়ামেস বোলা (raiamas-bola)। এ মাছটি সব সময় পাওয়া যায় না। সাধারণত এখানে এত বড় মাছ ধরা পড়ে না। তবে শীত মৌসুমে ৫ থেকে ১৫ কেজি ওজন পর্যন্ত বোল মাছ জেলেদের জালে আটকা পড়ে।”
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ বা আইইউসিএনের লাল তালিকায় রেইয়ামেস বোলাকে রাখা হয়েছে ‘ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত’ ক্যাটাগরিতে। এর মানে হল, সবচেয়ে কম বিপদগ্রস্ত; সহজেই দেখা যায় ও ব্যাপকভাবে বিস্তৃত প্রজাতিগুলো এ বিভাগের অন্তর্গত।
মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার আরও বলেন, “সাগরের মাছ ধরার ওপর বিভিন্ন ধরনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে পালন হওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। আবার বড় মাছ জেলেদের জালে আটকা পড়লে সবাই দেখে আনন্দ পান, তেমনি জেলেরা ভালো দাম পাচ্ছেন।”