মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
Published : 09 Mar 2024, 10:20 PM
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হল প্রাধ্যক্ষের অব্যাহতিসহ পাঁচ দাবিতে মশাল মিছিল করেছে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে একটি মশাল মিছিল বের হয়৷
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এসময় আন্দোলনকারীরা ‘যেই প্রক্টর ধর্ষক পোষে, সেই প্রক্টর চাই না’, ‘যে প্রক্টর সন্ত্রাস পোষে, সেই প্রক্টর চাই না’, ‘গেট আউট, গেট আউট, প্রক্টর গেট আউট’ ইত্যাদি স্লোগান দেন৷
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রোববার সিন্ডিকেট সভায় প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ও প্রাধ্যক্ষ সাব্বির আলমের অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী কনোজ কান্তি রায় সমাবেশে সঞ্চালনা করেন।
এতে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আলিফ মাহমুদ বলেন, “র্যাবের প্রেস ব্রিফিং থেকে স্পষ্টভাবে জানা যায়, ক্যাম্পাসে ইতোপূর্বে অনেক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে৷ এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্ব অবহেলা স্পষ্ট হয়ে ওঠে৷ আগামীকালের সিন্ডিকেট সভায় প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষের অব্যাহতি দিতে হবে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেখতে হবে, ধর্ষণের ঘটনায় তাদের কোনো ইন্ধন ছিল কিনা।”
তিনি বলেন, “এছাড়া আমরা আশঙ্কা করছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এখনো যৌন নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন৷ নয়তো তাকে বহিষ্কার করার পরও কেন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি তা আমাদের অজানা৷"
প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যে মাদক ও ধর্ষণের কারখানা তৈরি হয়েছে৷ সেখানে প্রক্টরের দায় রয়েছে। কিন্তু এখনো প্রক্টরকে স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে৷ প্রক্টর একটি নয়, একাধিক ধর্ষণ ও মাদকের ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য অসম্মানজনক৷”
বক্তব্য চলার এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম বাসভবন থেকে বের হয়ে আসেন।
উপাচার্যের সঙ্গে ছিলেন উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোস্তাফা ফিরোজ।
তখন আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের অব্যাহতি এবং শাস্তির দাবি জানিয়ে উপাচার্যের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন৷
এ বিষয়ে উপাচার্য নূরুল আলম বলেন, “আমি প্রক্টরের বিষয়টা শিগগিরই দেখব।”
নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের পাঁচ দফা দাবি হলো- ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি; মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্ত করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা; ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা। নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত চলাকালে তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।