নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে একজনের স্বজনের কাছে টাকা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
Published : 07 Dec 2024, 01:09 AM
বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষে স্পিড বোটের নিখোঁজ তিন যাত্রীর পরিচয় পাওয়া গেছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ।
এদিকে দুর্ঘটনায় নিখোঁজ একজনের বাড়িতে ফোন করে টাকা দাবির ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
তবে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিখোঁজদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানান বরিশাল সদর নৌ-থানার এসআই ওমর ফারুক।
নিখোঁজ তিনজন হলেন- ভোলার উত্তরচর ভেদুরিয়া এলাকার বাসিন্দা স্পিড বোট চালক মো. আল আমিন, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নোওয়াপাড়া এলাকার আজগর আলীর ছেলে রাসেল আমিন (২৫) এবং বাবুগঞ্জের রহমতপুরের দুলাল দাসের ছেলে সজল দাস (৩০)।
সন্ধ্যার পর এসআই ওমর ফারুক বাদী হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
আসামিরা হলেন- স্পিড বোট চালক আল-আমিন এবং বাল্কহেড চালক আটক শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ থানার কোরালতলী এলাকার বাসিন্দা খালেক মাঝি।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকালে কীর্তনখোলা নদীর লাহারহাট খালের প্রবেশমুখে জনতার হাট এলাকায় বাল্কহেডের সঙ্গে স্পিড বোটের সংঘর্ষ হয়। পরে নদী থেকে জালিস মাহমুদ (৫০) নামের এক যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এতে ভোলার দৌলতখান থানার কনস্টেবল মানসুর আহমেদ আহত হন। তবে এ ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে চারজন নিখোঁজের কথা জানিয়েছিল পুলিশ।
বিকালে এসআই ওমর ফারুক জানান, তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। সন্ধ্যার আগে উদ্ধার অভিযান শেষ করায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা কারো সন্ধান পায়নি। তবে ডুবে যাওয়া স্পিড বোট উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের ডুবুরিরা ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছেন। তবে নিখোঁজ কাউকে পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজের স্বজনের কাছে টাকা দাবি
দুর্ঘটনায় নিখোঁজ সজল দাসের মোবাইল নম্বর থেকে অজ্ঞাত কেউ তার মাকে কল করে ২৫ হাজার টাকা দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় সজলের চাচা শংকর দাস কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
শংকর দাস বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত থেকে কীর্তনখোলা নদী ও আশপাশের এলাকা এবং হাসপাতালগুলোতে খোঁজখবর নেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত তার সন্ধান মেলেনি।
কিন্তু সজল দাসের ব্যাগটি বরিশাল নগরের ডিসি ঘাট এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় কেউ বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “ব্যাগ পেয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, দুর্ঘটনাকবলিত ওই বোটটিতে সজল ছিল। তবে এরই মধ্যে সজলের ব্যক্তিগত নম্বর থেকে তার মায়ের মোবাইলে কল করা হয়। ফোনে জানানো হয় সজল তার জিম্মায় আছে।
“সেইসঙ্গে সজলকে বাড়ি পাঠাতে ২৫ হাজার টাকা দাবি করে ওই ব্যক্তি বিকাশ নম্বর দেন। তাৎক্ষণিক বিকাশে কিছু টাকা পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। তবে নম্বরটিতে টাকা পাঠানো যাচ্ছিল না। পরে সজলের নম্বরসহ ওই ব্যক্তির দেওয়া নম্বরগুলোতে কল করা হলে সবগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।”
বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয় বলে জানান নিখোঁজ সজলের চাচা শংকর দাস।
এদিকে একই ঘটনায় নিখোঁজ স্পিড বোটের চালক আলামিন ও অপর যাত্রী রাসেলের স্বজনদের কাছেও মোবাইল ফোনে কল করে টাকা চাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন শংকর দাস।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে যতটুকু তথ্য পেয়েছি তাতে বোঝা যাচ্ছে নিখোঁজ সজলের মোবাইল নম্বর ক্লোন করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পরপর আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছি। সিমগুলোর বিষয়ে তথ্য নেওয়া হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: