মহেশপুর গ্রামের সালাহ উদ্দিন বলেন, “এ গ্রামের চারশ পরিবার পানিবন্দি। মানুষর ঘরে পানি উঠছে। কেউ এখন পর্যন্ত ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে আসেনি।”
Published : 26 Aug 2024, 04:04 PM
লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৮ লাখের মতো বাসিন্দা।
রোববার থেকে সোমবার পর্যন্ত সদরের বেশ কিছু এলাকা এবং রামগঞ্জের কিছু অংশ নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। চারদিকে বানভাসি মানুষের হাহাকারের মধ্যে দেখা দিয়েছে ত্রাণ ও সুপেয় পানির সংকট।
এদিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার লাহারকান্দি উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে সোমবার ভোরে আবদুল মালেক নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে ত্রাণ সহযোগিতা খুবই কম আসছে লক্ষ্মীপুরে। বিশেষ করে সদর উপজেলায় বন্যার পানির জন্য ত্রাণের গাড়ি ঢুকতে পাচ্ছে না। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো যে ত্রাণ দিছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
সন্বয়ের অভাবে অনেকে একাধিকবারও ত্রাণ পাচ্ছেন বলে সদরের বন্যা কবলিতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
সদর উপজেলার বাঙ্গাখা ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের সালাহ উদ্দিন বলেন, “আমাদের গ্রামের চারশ পরিবার পানিবন্দি। মানুষর ঘরে পানি উঠছে। কিন্তু পানি নামার আশায় কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে না। এখানে কেউ এখন পর্যন্ত ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে কেউ আসেনি।”
দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের ওমর ফারুক বলেন, “মূল সড়ক থেকে আমাদের বাড়ি দূরে হওয়ায় এখানে কেউ ত্রাণ নিয়েও আসেনি।”
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, ত্রাণ সহযোগিতা করার জন্য এবং লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য নৌকার প্রয়োজন।
পানিবন্দি মানুষের জন্য এ মুহূর্তে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার সেলাইন ও শিশু খাদ্য বেশি প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান জানান, জেলায় প্রায় ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সদর উপজেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী, উত্তর হামছাদী, বাঙ্গাখা, লাহার কান্দি, কুশাখালী ও চরশাহী ইউয়ন বেশি প্লাবিত হচ্ছে। রামগঞ্জ উপজেলারও বেশ কিছু অংশ নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে।
আশ্রয়কেন্দ্রে মৃত্যু
লক্ষ্মীপুরে আশ্রয়কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে আব্দুল মালেক নামে ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।
সোমবার ভোরে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার লাহারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে তার মৃত্যু হয় বলে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান জানান।
মৃত আব্দুল মালেক সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের লাহারকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, রোববার বিকালে মালেকসহ তার পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে আসেন। তার অ্যাজমার সমস্য ছিল। রাতে বৃষ্টি ছিল। এক পর্যায়ে মালেক অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ভোররাতে তার মৃত্যু হয়।
মালেকের বড় ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন মুন্না বলেন, “বাড়িতে পানি। এজন্য আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছিলাস। ধারণা করা হচ্ছে, ঠান্ডাজনিত কারণেই বাবা মারা গেছেন।”