এর আগে সোমবার একই আদালত তিনজনের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছিল।
Published : 13 Nov 2024, 07:59 PM
বাসে পেট্রল বোমা মেরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আটজনকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদারের ফের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার বিকাল ৫টার দিকে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা শুনানি শেষে তাদের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) কাইমুল হক রিংকু জানান।
এ মামলায় জহিরুল ইসলাম নামে বুড়িচংয়ের এক আওয়ামী লীগ নেতাকেও দুইদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে।
এর আগে সোমবার একই আদালত তিনজনের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার বিকালে তাদেরকে আদালতে হাজির করে ফের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করেন। পরে তদন্ত কর্মকর্তার চাহিদা অনুযায়ী আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
“শহীদুল হক ও বেনজীর আহমেদ এই হত্যাকাণ্ডের মূল মাস্টারমাইন্ড। শহীদুলকে রিমান্ডে ভালো করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।”
শহীদুল হকের পক্ষের আইনজীবী এ এইচ এম আবাদ হোসেন বলেন, “আমরা আদালতে রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুরের দাবি জানাই। কিন্তু আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ না করে দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।”
মামলার বরাতে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে ‘আইকন পরিবহনের’ একটি বাসে একটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় আটজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করে তৎকালীন পুলিশ।
পরে ৫ অগাস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ১১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার আদালতে একই ঘটনায় পাল্টা মামলা দায়ের করেন ওই বাসটির তত্ত্বাবধায়ক পরিচয়দানকারী আবুল খায়ের।
বর্তমান মামলাটিতে সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, কুমিল্লার সাবেক পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অন্তত ১৯০ জনের নাম রয়েছে।
এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারি ঘটনার দিন ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৭০ থেকে ৮০ জনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় ৭৮ জনকে আসামি করে ২০১৭ সালের ২ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দেন চৌদ্দগ্রাম থানার তৎকালীন এসআই মো. ইব্রাহিম। এ মামলার প্রধান আসামি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
এই মামলার ৫১ নম্বর আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মামলায় কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের মধ্যে যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, মনিরুল হক চৌধুরীসহ অনেকে আছেন।
আরও পড়ুন:
৮ বাসযাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা: সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ২ দিনের রিমান্ডে