এই রুটের যাত্রীদের ভোগান্তি কমার পাশাপাশি আগের চেয়ে ভাড়ার খরচও বেঁচে যাচ্ছে।
Published : 12 May 2024, 08:29 PM
গাজীপুরের টঙ্গী থেকে দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল স্টেশন পর্যন্ত বিআরটিসির দ্বিতল শাটল বাস চালুর পর এই রুটের যাত্রীদের ভোগান্তি কমার পাশাপাশি বেঁচে যাচ্ছে ভাড়ার খরচও। এতে ওই রুটে বিআরটিসি বাসে নিয়মিত চলাচল করা যাত্রীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার টঙ্গী থেকে দিয়াবাড়ি পর্যন্ত বাস সার্ভিসটির উদ্বোধন করেন গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
প্রথম দুইদিন এ রুটে বাস চলাচলের খবর তেমন প্রচার না পাওয়ায় যাত্রীর সংখ্যা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে ছিল না।
তবে শনিবার থেকে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিআরটিসির টঙ্গী স্টেশন রোড বাস কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা লাইনম্যান মো. হান্নান মল্লিক।
তিনি বিআরটিসির (জোয়ার সাহারা বাস ডিপোর) শ্রমিক-কর্মচারী লীগ- সিবিএর সভাপতিও।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীসংখ্যা যা-ই থাকুক টঙ্গী-দিয়াবাড়ি দুই প্রান্ত থেকে প্রতিটি বাস ৭-১০ মিনিট পর পর ছেড়ে যাচ্ছে। টঙ্গী থেকে ১০-১৫ জন যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও
আব্দুল্লাহপুর যাওয়ার আগেই বাস যাত্রী দিয়ে প্রায় পূর্ণ হয়ে যায়।
আর উত্তরার হাউস বিল্ডিং ও নর্থ টাওয়ার যাওয়ার পর যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে গেলে অনেকেই সিট না পেয়ে দাঁড়িয়েই রওনা হন দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল স্টেশনের উদ্দেশে। আবার দিয়াবাড়ি থেকে টঙ্গী যাত্রা পথে বাসের সিট দ্রুতই পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলছে এ সার্ভিস।
বিআরটিসির টঙ্গী স্টেশন রোড বাস কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা লাইনম্যান হান্নান মল্লিক জানান, দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া ২২ টাকা হলেও সেখানে ২০টা নেওয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে টঙ্গী থেকে আব্দুল্লাহপুর, হাউজ বিল্ডিং, নর্থ টাওয়ার, জমজম টাওয়ার পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা।
আবার আব্দুল্লাহপুর, হাউজ বিল্ডিং, নর্থ টাওয়ার, জমজম টাওয়ার থেকে দিয়াবাড়ি পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। পথে কোনো সমস্যা না হলে ২০/২৫ মিনিটেই গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে বাসগুলো।
বিআরটিসির শাটল বাস চালু হওয়ায় টঙ্গী ও গাজীপুরের যাত্রীরা দিয়াবাড়ি পর্যন্ত এক বাসেই উত্তরার নর্থ টাওয়ার, হাউস বিল্ডিং, জমজম টাওয়ার, ১২ নম্বর সেক্টর, খালপাড় হয়ে দিয়াবাড়ি পর্যন্ত পৌঁছতে পারছেন।
বাসযাত্রী নান্টু চন্দ্র ঘোষ জানান, পরিবার নিয়ে তিনি টঙ্গী থাকেন; কর্মস্থল উত্তরার জমজম টাওয়ার। ফেইসবুকে ওই রুটে বিআরটিসি বাস চলাচলের খবর জানতে পেরেছেন। শনিবার বিআরটিসি বাসেই প্রথমবারের মত তিনি কর্মস্থলে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, “আগে টঙ্গী থেকে প্রতিদিন কর্মস্থল জমজম টাওয়ারে যেতে দুই দফা গাড়ি পাল্টানো ও ৪০/৪৫ টাকা ভাড়া গুনতে হত। এখন এক বিআরটিসি বাসেই জমজম টাওয়ারের সামনে গিয়ে নামি ১০ টাকায়। এতে একদিকে আমার ভোগান্তি কমেছে ও অন্যদিকে ভাড়াও সাশ্রয় হচ্ছে।”
নাইমুল ইসলাম নামে এক যুবক বিআরডিবিতে চাকরি করেন।
তিনি উত্তরার নর্থ টাওয়ার থেকে স্বপরিবারে বাসে ওঠেন, দিয়াবাড়ি গিয়ে তিনি মেট্রোরেলে চড়ে নামবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে।
তিনি বলেন, “বাস সার্ভিসটি চালু হওয়ায় গাজীপুর ও টঙ্গীবাসীর জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে।”
একই কথা জানালেন, গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকার বাসিন্দা বাসযাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস, জয়দেবপুরের মনির হোসেন।
ওই রুটে লাইনম্যানের দায়িত্বে থাকা হান্নান মল্লিক বলেন, “তবে টঙ্গী স্টেশন এলাকায় পাবলিক বাসগুলো যাত্রী তুলতে গিয়ে বিআরটিসি কাউন্টারের সামনে গিয়ে অনাহুত ভিড় করায় আমাদের বাসের যাত্রীদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।”
টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় ছিনতাইকারীর দৌরাত্ম্য
বিআরটিসি বাস কাউন্টারে টিকেট বিক্রেতা রাজা মিয়া ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, কাউন্টারটির সামনে ও টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় ১০/১২ জন পকেটমার ও ছিনতাইকারী প্রকাশ্যেই বিচরণ করে। সুযোগ বুঝে তারা যাত্রী ও পথচারীদের পেকেট থেকে টাকা, মোবাইল ফোন ও নারীদের গহনা ছিনিয়ে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এ এলাকায় ছিনতাইকারী ও পকেটমারদের গ্রেপ্তারে প্রতিদিনই পুলিশের একটি বিশেষ টিম কাজ করছে। প্রতিদিনই কেউ না কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছে। আমরা টঙ্গী এলাকায় তাদের অবস্থান টের পেলেই অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠাচ্ছি।”
আরও পড়ুন: