বরিশালে ইলিশ রক্ষা অভিযানের ট্রলারে আগুন

ইলিশ রক্ষা অভিযানে গত ১৪ বছর ধরে ট্রলারটি স্থানীয় প্রশাসন ব্যবহার করছে, যাদের বিরুদ্ধেই আগুন দেওয়ার অভিযোগ এটির মালিকের।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2022, 06:54 PM
Updated : 13 Oct 2022, 06:54 PM

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় ইলিশ সংরক্ষণের একটি ট্রলার আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে; যেটি নিয়ে ইলিশ রক্ষা অভিযানে গিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সন্ধ্যা নদীর বাবুগঞ্জ খেয়াঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে ট্রলার মালিক মো. আনোয়ার হোসেনের অভিযোগ।

ট্রলারটি নিয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত ফাতিমাসহ উপজেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা অভিযানে গিয়েছিলেন।

এরপর নির্দেশ অমান্য করে সেটি ঘাটে ভেড়ানোর কারণে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ট্রলার মালিকের।  

এ ব্যাপারে জানতে ইউএনওর মোবাইল ফোনে রাতে কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে অগ্নিসংযোগের সময়কার একটি ভিডিওতে ইউএনও নুসরাতকে বলতে শোনা গেছে, “আমার সঙ্গে এ বিষয়ে কেউ কন্টাক্ট করার চেষ্টা করবেন না। এটা ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিষয়; আলামত নষ্ট করা হচ্ছে।“

সন্ধ্যা নদীতে আগুনে একটি ট্রলার পুড়ে গেছে জানিয়ে বাবুগঞ্জ থানার ওসি মো. মাহবুবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যান ভালো বলতে পারবেন; আমি ছিলাম না। আমি শোনা কথা বলতে পারব। একটি ট্রলারে আগুন লাগছে; পুড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।”

বাবুগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার আব্দুল মালেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ৯টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভাই।”

অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ইমদাদুল হক দুলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটি স্পিডবোট ও দুটি ট্রলার নিয়ে অভিযান চালান তারা (উপজেলা প্রশাসন)। অভিযান শেষে ফেরার সময় ইউএনও তার নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ট্রলার তীরে ভেড়াতে নিষেধ করেন। কিন্তু ওই ট্রলারের চালক তীরে ভেড়ায়। এতে ইউএনও ক্ষুব্ধ হলে চালক পালিয়ে যান।”

এসময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না জানিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, “শুনেছি অভিযানে যাওয়া ট্রলারটি তীরে ভেড়ার পর মাছ ও জাল সরিয়ে ফেলে। আজকেও সেই কাজ করেছে; এতে বদনাম হয়। তাই হয়ত ইউএনও আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছেন।”

ট্রলার মালিক আনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তিনি উজিরপুরের আলতারপাড় থেকে দেশি প্রজাতির মাছ কিনে এনে বাবুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন। গত ১৪ বছর ধরে অভিযানে প্রশাসনকে তার ট্রলার ব্যবহার করতে দেন।

তার অভিযোগ, অভিযান শেষে তীরে ভিড়তে নিষেধ করার বিষয়টি জানানোর জন্য মৎস্য কর্মকর্তা ফোন করেছিলেন। কিন্তু ইঞ্জিনের শব্দে রিং শুনতে না পারায় কল রিসিভ করতে পারেননি তিনি।

ট্রলার ঘাটে ভেড়ার পর তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এরপর তিনি ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

এ ঘটনার পরই তার ট্রলারে আগুন দেওয়া হয়, এতে ট্রলারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ট্রলারটি নির্মাণে তার ব্যয় হয়েছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা।