নারায়ণগঞ্জে সন্ধ্যায় ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪২ মাস উপলক্ষে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
Published : 08 Jan 2025, 09:45 PM
নারায়ণগঞ্জে ‘ওসমান পরিবারের’ সহযোগীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সাংস্কৃতিক, নাগরিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।
সেইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত দাখিলের দাবি জানান তারা।
বুধবার সন্ধ্যায় ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪২ মাস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে এসব দাবি জানানো হয়।
শেখ হাসিনা ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রেখেছিলেন অভিযোগ করে এই হত্যা মামলাটি বিচারে বাধা কোথায়?, তা অন্তর্বর্তী সরকারের জানতে চেয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
জেলা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় এতে ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি, খেলাঘর আসরের সাবেক সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের মাহবুবুর রহমান মাসুম, সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায়, কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, বাসদের সদস্যসচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মাহমুদ হোসেন এবং সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা বক্তব্য দেন।
শেখ হাসিনা দেশে ‘দুর্বৃত্ত, মাফিয়া ও গডফাদারের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন’ মন্তব্য করে রফিউর রাব্বি বলেন, “তার নির্দেশে সাড়ে ১১ বছর ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার বিচার প্রক্রিয়া আবার শুরু করলেও তাতে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।
“ওসমান পরিবার হত্যা, চাঁদাবাজি, দখল, নৈরাজ্যের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন। আজকে তারা পালিয়ে গেলেও নতুন চক্র আবার নারায়ণগঞ্জে গডফাদার হতে মরিয়া। আবার দখল, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য শুরু হয়েছে। প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিষ্ক্রিয়।”
রাব্বি বলেন, “প্রশ্ন হচ্ছে, ঘাতক ওসমান পরিবার কীভাবে, কাদের সহযোগিতায় পালিয়ে গেল? ১৫ বছর হত্যা-লুটপাটের সঙ্গে জড়িত থাকা ওসমানদের সহযোগী কেউই গ্রেপ্তার হয়নি। আইনের আওতায় আসেনি।
“শেখ হাসিনা দেশে বিচার ব্যবস্থাকে যেভাবে ধ্বংস করে রেখেছে, তার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাহলে চব্বিশে এত মৃত্যু, এত আত্মদান এর ফলাফল কী? এ অভ্যুত্থানকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।”
এ সময় ত্বকী, সাগর-রুনি ও তনুসহ নারায়ণগঞ্জের সকল হত্যার বিচার দাবি করেন রফিউর রাব্বি।
সমাবেশে বক্তারা ত্বকী হত্যার নির্দেশদাতা শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমানসহ সকল আসামিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত এই মামলার অভিযোগপত্র দেওয়ার দাবি জানান।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় ত্বকী। দুদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ত্বকীর স্বজনরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওসমান পরিবারের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করলেও দীর্ঘ বছরেও এই মামলার তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা র্যাব।