“আতঙ্কে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে গিয়ে একজন পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়।”
Published : 02 Jun 2024, 01:26 PM
গোপালগঞ্জে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন রিসোর্টের সামনে গ্রামবাসীদের লাটিপেটা করেছে অভিযোগ উঠেছে।
সদর উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল গ্রামে ‘সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক’ নামের ওই রিসোর্টের সামনে শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা বলছেন, এ ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন- ইকোপার্ক সংলগ্ন সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল গ্রামের বিনোদ বিহারি বলের ছেলে বিপ্লব বল, সন্তোষ বলের ছেলে সঞ্জয় বল ও সাগর বল এবং ওই এলাকার রনি।
তবে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলামের ভাষ্য, লাঠিপেটার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ঘটনার বর্ণনায় আহত বিপ্লব বলেন, “গত ২-৩ বছরে বেনজীর আহমেদ আমাদের গ্রামের অসহায় পরিবারের জমি বিভিন্ন কৌশলে দখল করে নিয়েছে। এ নিয়ে আমরা ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাইনি। বেনজীরের অপকর্ম এখন বের হয়ে আসছে।
“তাই ৪-৫ দিন ধরে তার বিরুদ্ধে মিডিয়ায় কথা বলে মনের ক্ষোভ মেটাচ্ছি। এ কারণে পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে।”
আহত সঞ্জয় বল বলছিলেন, “গত দুই বছরে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ আমাদের গ্রামের অসহায় লোকের জমি দখল করে নিয়েছে।এ নিয়ে আমরা ভয়ে মুখ খুলতে পারি নাই। দুদকের অনুসন্ধানে বেনজীর ও তার পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসার পর আমরা কথা বলছি।
“এ কারণে শনিবার সন্ধ্যার পর পুলিশ এসে আমাদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করে। আমার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেছে। আমাদের কী দোষ ছিল, পুলিশ এসে আমাদের বেধড়ক মারপিট করবে?”
সাভানা ইকোরিসোর্টের নিরাপত্তা কর্মী আব্দুল্লাহ বলেছেন, “শনিবার সন্ধ্যার দিকে গ্রামের কিছু লোক রিসোর্টের সামনে জড়ো হয়। তারা বিভিন্নভাবে আমাদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছিল। পরে রিসোর্টের দোকানে অবস্থান নেয় তারা।”
তিনি বলেন, “সেখানে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। রিসোর্টে হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে আমাদের পক্ষ থেকে পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়। সন্ধ্যার পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”
লাঠিপেটার প্রসঙ্গে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “সাভানা ইকোরিসোর্টের কর্মচারীরা ফোন করে খবর দেন যে, পার্কের সামনে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়েছে। তারা দারোয়ানকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই।
“সেখানে যাওয়ার পর দেখি, দোকানের ভেতর কিছু লোক জুয়া খেলছে। তাই তাদের ধমক দিয়েছি। এ সময় আতঙ্কে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে গিয়ে একজন পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে; এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়।”
তিনি বলেন, “তারা লাঠিপেটার মিথ্যা অভিযোগ করেছে। সেখানে এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।”
বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ‘চাপ দিয়ে জমি দখলের’ কিছু অভিযোগ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। তবে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। দুদিন আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বেনজীর দেশে আছেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াসা তৈরি হয়েছে।