এক নবীন শিক্ষার্থী ভয় পেয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়।
Published : 13 Jan 2025, 03:55 PM
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের ঘটনায় ২৮ শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক বজলুর রহমান মোল্যা।
বহিষ্কৃতরা সবাই হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক ছাত্র। তাদের মধ্যে লেভেল-১, সেমিস্টার-২, লেভেল-২, সেমিস্টার-২ এর শিক্ষার্থীর সঙ্গে স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরত এক শিক্ষার্থী রয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা বলছে, রোববার রাত ৯টায় হলের রিডিং রুমে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে ডাকা হয়। এ সময় সবাইকে মোবাইল ফোন রুমে রেখে আসতে বলা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা গেস্টরুমে গেলে তাদের শরীরে তল্লাশি করে উদ্ভট নিয়ম মানার নির্দেশনা জানানো হয়। এগুলো হলো-সাইকেল চালানো যাবে না, দ্বিতীয় তলায় যাওয়া নিষিদ্ধ, বড় ভাইদের দিনে একাধিকবার সালাম দিতে হবে, হলে লুঙ্গি পরা যাবে না, হলের গ্রন্থাগারে ল্যাপটপ আনা যাবে না, ক্যানটিনে যাওয়া যাবে না ইত্যাদি।
এক পর্যায়ে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা গিয়ে নবীনদের কাছে বিভিন্ন সমস্যার কথা জানতে চান। সমস্যাগুলো বলার পর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা চলে যান। পরে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা আবার নবীনদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। বিভিন্ন ধরনের অদ্ভুত কাজ করতে বাধ্য করা হয়। এক পর্যায়ে এক নবীন শিক্ষার্থী ভয় পেয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। পরে তাকে হলের মধ্যেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলা হয়।
ওই ঘটনা জানাজানি হলে রোববার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল কর্তৃপক্ষ হল পরিদর্শন করে জড়িত শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে।
প্রাধ্যক্ষ বজলুর রহমান বলেন, “এ ঘটনায় ৫৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সিনিয়র শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের কারণে এক নবীন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এটা তো মানা যায় না। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি।”
সোমবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, “যাদের শনাক্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে ২৮ জন সোহরাওয়ার্দী হলের আর বাকিদের এটাচমেন্ট অন্য হলে। কিন্তু তারা সোহরাওয়ার্দী হলে থাকে।
“সোহরাওয়ার্দী হলের ২৮ জনকে হল থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে এবং অধিকতার শাস্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে পাঠানো হবে। যারা এই হলের ছাত্র না কিন্তু অবৈধভাবে থাকে এবং এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।”