তবে সেতুটির পানির নীচে থাকা পিলারগুলোর সংস্কার কাজ করা সম্ভব নয়।
Published : 26 Dec 2023, 11:17 PM
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ক্বিন ব্রিজ দিয়ে এখন শুধু জনসাধারণ হেঁটে চলাচল করতে পারবে, যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সেতুর দায়িত্বে থাকা সিলেটের সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ জানায়, নিরাপত্তা ও ঐতিহ্যবাহী সেতুটি টিকিয়ে রাখতেই যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে গিয়ে দেখা গেছে, সিলেট শহরকে দুই ভাগে বিভক্ত করা সুরমা নদীর উপর নির্মিত সেতুটি দিয়ে লোকজন হেঁটে চলাচল করছেন। যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ পাশের প্রবেশ মুখে বসানো হয়েছে একাধিক লোহার খুঁটি। তবে মানুষজনের পাশাপাশি মোটরসাইকেল দিয়েও চলাচল করতে দেখা গেছে।
সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চার মাসের সংস্কার কাজ শেষে সেতুটি ২১ ডিসেম্বর চালু করা হয়েছে। তবে সেতুটির পানির নীচে থাকা পিলারগুলোর সংস্কার কাজ করা সম্ভব নয়। তাই বর্তমানে এটি পদচারী সেতু হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
“সিলেটের শতবর্ষের বেশি পুরনো সেতুটি দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল করলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বিধায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”, বলেন প্রকৌশলী।
সওজ জানায়, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে সিলেট সিটি করপোরেশন ও সওজ বিভাগ যৌথভাবে সেতুটির সংস্কার করে। ওইসময় সেতুটিকে পদচারী-সেতুতে রূপান্তর করতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে সেতুর দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দাদের দাবির মুখে ৫২ দিন পর আবারও যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
তারপর ২০২১ সালে সেতুটি যান চলাচলের জন্য আবারও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠলে ওই বছরের জুলাই মাসে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। পরে সেতুটি সংস্কারের জন্য ২০২০ সালে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়।
সেখানে সেতুটি সংস্কারের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিন সদস্যের একটি কমিটি করে দেন বিভাগীয় কমিশনার। পরবর্তীকালে সওজের পক্ষ থেকে সেতুটি সংস্কারে মন্ত্রণালয়ের কাছে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়। তারপর ২০২১ সালের ফ্রেরুয়ারিতে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পায় সওজ সিলেট বিভাগ।
ওই বছরের জুনে বরাদ্দের টাকা রেলওয়ের সেতু বিভাগকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তারপর নানা জটিলতা কাটিয়ে অর্থ বরাদ্দের দুই বছরের বেশি সময় পর চলতি বছরের ১৭ অগাস্ট থেকে এ সেতুর সংস্কার কাজ শুরু করে রেল বিভাগ।
ক্বিন ব্রিজ নির্মাণ হয় ব্রিটিশ আমলে। টানা দুই বছর নির্মাণকাজ শেষে ১৯৩৬ সালে সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। তৎকালীন আসাম প্রদেশের গভর্নর মাইকেল ক্বিনের নামে এই সেতুর নামকরণ হয় ক্বিন ব্রিজ। লোহা দিয়ে তৈরি এই সেতুর দৈর্ঘ্য এক হাজার ১৫০ ফুট এবং প্রস্থ ১৮ ফুট।