যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন, সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউট অব দ্য স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ (সোয়াস) লন্ডন এবং বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম বোর্ডের সহযোগিতায় ঢাকাই মসলিন নিয়ে একটি সেমিনার ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
Published : 18 Jun 2022, 10:25 PM
লন্ডনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সোয়াস বিশ্ববিদ্যারয়ে আয়োজিত ওই আলোচনায় ঢাকাই মসলিনের গৌরব পুনরুজ্জীবিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ উদ্যোগ ও এর সাফল্য তুলে ধরা হয়।
‘দ্য বাংলা কোর্টইয়ার্ড' শিরোনামে প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারক, গবেষক, বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষাবিদরা অংশ নেন।
এদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, সোয়াস- এর পরিচালক অধ্যাপক অ্যাডাম হাবিব, দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউট অব সোয়াস- এর পরিচালক প্রফেসর এডওয়ার্ড সিম্পসন, মসলিন পুনরুজ্জীবন প্রকল্প- এর প্রধান বিজ্ঞানী এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মনজুর হোসেন, ব্রিটিশ ডিজাইন ও ইতিহাসবিদ, ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আলবার্ট মিউজিয়ামের সাবেক কিউরেটর সোনিয়া অ্যাশমোর, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের মসলিন পুনরুজ্জীবন প্রকল্প পরিচালক মো. আইয়ুব আলী, বস্ত্র উদ্যোক্তা সারাহ মাহাফি ও সাইফুল ইসলাম এবং বস্ত্র শিল্পী ও ডিজাইনার রেজিয়া ওয়াহিদ।
মন্ত্রী আরো বলেন, "এখন আমরা ঢাকাই মসলিনকে পুনরুজ্জীবিত করেছি এবং মসলিন কাপড় রপ্তানি শুরু করার জন্য আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করেছি এবং আশা করছি এক বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যের বাজারে রপ্তানি শুরু করা যেতে পারে।"
হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জামদানির গৌরব পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আজ তারই দূরদর্শী কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর অসাধারণ উদ্যোগে দুইশ বছর আগে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঢাকাই মসলিনের প্রাচীন প্রযুক্তি এবং হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন। যুক্তরাজ্যে যারা বস্ত্র, বিশেষ করে মসলিন নিয়ে গবেষণা করেন তাদের কাছে এবং ব্রিটিশ ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের সামনে এই সাফল্যের গল্প তুলে ধরাই বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাংলা কোর্টইয়ার্ডের লক্ষ্য।”
সোনিয়া অ্যাশমোর ২০০০ সাল থেকে লন্ডনে মসলিন নিয়ে গবেষণা করছেন।
তিনি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় বলেন, "মসলিন মূলত ঢাকার আশেপাশের এলাকার শিল্প। এটি ২০১৩ সালে ‘ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি রিপ্রেজেন্টেটিভ লিস্টে’ তালিকাভুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। আজ এই মসলিন বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দেশকে নানাভাবে উপকৃত করতে পারে।"
নিজের বকতৃতায় সোয়াস- এর পরিচালক অধ্যাপক অ্যাডাম হাবিব ঢাকাই মসলিনের গৌরবগাঁথাসহ বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রচারে সোয়াস বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম সংবাদপত্রসহ কোনো গণমাধ্যমের উপস্থিতির আগেই মসলিন কীভাবে প্রথম বিশ্বব্যাপি ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে সে বিষয়ে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, “মসলিন বৈশ্বিক টেক্সটাইল শিল্প ও বাজারে তার গর্ব এবং ফ্যাশন শিল্পে প্রভাবশালী অবস্থান আজ আবার ফিরে পেতে পারে।”
দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউট অব সোয়াস এর পরিচালক অধ্যাপক অ্যাডওয়ার্ড সিম্পসন অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে মসলিন পুনরুজ্জীবনের উপর বাংলাদেশ হাই কমিশন নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র- 'আ থ্রেড কানেক্টিং আওয়ার টাইমস' দেখানো হয়।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |