করোনাভাইরাস: বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবনের গায়ে বাংলাদেশির ছবি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চলাকালে সাহসী ভূমিকা রাখায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থিত বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন ‘বুর্জ আল খালিফা’র গায়ের ডিসপ্লে-তে ফুটে উঠলো এক বাংলাদেশির ছবি।

জাহাঙ্গীর কবীর বাপপি, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2021, 06:46 PM
Updated : 17 April 2021, 08:02 PM

দুবাইয়ের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় আমিরাত সরকারের দৃষ্টিতে অতিমারী চলাকালে ‘ফ্রন্টলাইন হিরো’র ভূমিকা পালন করা ৮ জনের ছবি একে একে প্রকাশ হয়।

এর মধ্যে চার নম্বরে ভেসে ওঠে বাংলাদেশি মোশাররফ হোসেন শহীদ (৩৮) এর ছবি। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। 

২০০৬ সাল থেকে মোশাররফ দুবাই মিউনিসিপ্যালিটির ‘ইমার্জেন্সি পেস্ট কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্ট’ এ কাজ করছেন মোশাররফ। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর তাকে আত্মসুরক্ষা ও জীবাণুমুক্তির কাজে ব্যবহার হওয়া রাসায়নিকের মিশ্রণ এবং প্রয়োগের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। 

এ ব্যাপারে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে মোশাররফ বলেন, “মাস্ক, গ্লাভস, ফেইস শিল্ড, প্রটেক্টিভ স্যুটে সজ্জিত হয়ে কারফিউ চলাকালে কখনো হেভি ভেহিকলে, কখনো বাইকে, কখনো ড্রোন এর মাধ্যমে জীবাণুমুক্তির কাজ করতে হতো আমাদেরকে। কাজগুলো সহজ ছিল না।”

“কিন্তু আমি দিনের পর দিন, রাতের পর রাত কাজ করে যেতাম। বুঝতে পারতাম এটা কত জরুরী। অন্যদিকে আমার পরিবার-পরিজন উৎকণ্ঠায় থাকত আমি আবার করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হই কিনা।”

স্ত্রী ও শিশুকন্যা ছাড়াও দেশে সাত ভাই এবং দুই বোনের বড় পরিবার রয়েছে জানিয়ে মোশাররফ বলেন, “সবাই আমার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু আমি জানি আমার দায়িত্ব কত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদেরকে করোনা মোকাবেলা করতে শেষ পর্যন্ত  লড়ে যেতে হবে।”

“আমার শিশু কন্যাকে একদিন বুকে জড়িয়ে ধরবো এ স্বপ্নেই আমার লড়াইয়ের দিনগুলো কাটে।”

মোশাররফ বলেন, “আমি তো একা না আমার সাথে আরও অনেকে ছিলেন, আরও অনেক বাংলাদেশিও। তাদের মধ্য থেকে তারা আমাদেরকে নির্বাচিত করেছেন।”

‘ফ্রন্টলাইন হিরো’ হিসেবে বুর্জ খালিফা-র ডিসপ্লেতে প্রদর্শিত বাকিরা হলেন-

হামদা আল হাম্মাদি- দুবাইর এয়ার উইং অ্যাম্বুলেন্স ইউনিটের প্রথম আমিরাতি নারী অ্যাডভান্সড প্যারামেডিক তিনি।

ইসরা আল আগা- আজমান মেডিকেল কলেজ ও শারজাহ হেলথ সেন্টারের একজন স্বেচ্ছাসেবক।

আমর বাদর আল বুসায়েদি- এমিরেটস রেড ক্রিসেন্ট টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইউনিটের প্রধান।

ডেভিড সাইমন- তিনি একজন চিকিৎসক। দিনরাত চিকিৎসা করে নিজেও কোভিড-১৯ সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু সংক্রমিত অবস্থাতেও চিকিৎসদের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

জয়নাব আহমদ ফাহিম- তিন দশক ধরে নার্স এর পেশায় আছেন। ।

মোহাম্মদ আল খুরি- আবুধাবি ক্যাপিটাল পুলিশের উপপ্রধান। আবুধাবিতে কোভিড অতিমারীর দ্রুত সংক্রমণের সময় নিবিড়ভাবে কাজ করতে গিয়ে তিনি নিজে কোভিড আক্রান্ত হলেও তাতে দমে না গিয়ে সাহস ও আত্মত্যাগের সাথে দল মোবিলাইজ করে বহু জীবন রক্ষায় ভূমিকা রাখেন।

থুরাইয়া আলী আল হাশমি- আবুধাবি পুলিশের মেডিকেল সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টের প্রধান।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন