‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেই’ সরকার পতন: ফখরুল

আন্দোলনের সময় প্রাণ হারানো ৩ নেতার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2023, 02:33 PM
Updated : 14 Jan 2023, 02:33 PM

‘অত্যাচার ও নির্যাতনকে’ জয় করে উজ্জীবিত নেতাকর্মীদের ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেই’ সরকারের পতন হবে বলে আশা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের।

তার অভিযোগ, “আমাদের প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ছয়শ নেতাকর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে, সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে, আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী এখন জেলে আছে, আমাদের শীর্ষ নেতারাও অনেকে জেলে আছেন, ছাত্রনেতারা আছে, যুব নেতারা আছে, স্বেচ্ছাসেবক নেতারা আছে।

“আমি কারও মুখে এতটুকু ক্লান্তি দেখিনি, হতাশা দেখেনি। সবাই উজ্জীবিত যে- যত নির্যাতন আসুক, অত্যাচার আসুক, নিপীড়ন আসুক- শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই ভয়াবহ দানবকে পরাজিত করব। আমরা সত্যিকার অর্থে আমরা এখানে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব।”

শনিবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ‘চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে’ গুলিতে নিহত বাগেরহাটের নুরে আলম তানু, ঢাকার মকবুল হোসেন ও পঞ্চগড়ের আব্দুর রশিদ আরেফীনের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়।

নিহত নেতাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দল সবসময় তাদের পাশে থাকবে।

“যারা প্রাণ দিয়েছেন, তারা একটা আদর্শের জন্য, একটা লক্ষ্যের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। সেই আদর্শ, সেই লক্ষ্য হচ্ছে- তার নিজের দেশকে মুক্ত করবার জন্য, এখানে সকল মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করবার জন্য।”

অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও যুক্ত হয়ে নিহত পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

অগাস্টের পর থেকে আন্দোলন চলাকালে বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী ‘নিহত’ হওয়ার দাবি করে তিনি বলেন, “তারা চলে গেছেন, শহীদ হয়েছেন, কিন্তু বীরের মত। তারা কেউ পেছনে পালাতে গিয়ে নিহত হননি, তারা সম্মুখযুদ্ধে সামনে দাঁড়িয়ে বুকে পেতে দিয়েছেন। দেশপ্রেমের জন্য তাদের যে আত্মোৎসর্গ- সেই আত্মোৎসর্গ এদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।”

পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের তরফ থেকে অর্থ সহযোগিতার চেক পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি, বাগেরহাট স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক নিহত নুরে আলম তানুর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, পল্লবী থানার ৫ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক নিহত মকবুল হোসেনের স্ত্রী হালিমা আখতার বর্ষা এবং পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দান দীঘি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ আরেফীনের স্ত্রী শিরিন আখতার।

এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।