প্রজন্ম ৭১ এর প্রচার সম্পাদক অনল রায়হান বলেন, “জামায়াতের নিবন্ধন যখন বাতিল হল, তখন আমরা সবাই জানতাম জামায়াত নতুন ফ্রন্ট খুলবে। নতুন চেহারা নিয়ে আসবে।"
Published : 17 Nov 2022, 03:59 PM
নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ডেভেলোপমেন্ট পার্টি (বিডিপি) কিংবা জামায়াত সংশ্লিষ্ট কেউ ‘অন্যভাবে’ নিবন্ধন নিতে ইসিতে আসছে কি না, তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।
জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোনো দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার দাবি জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ৭১ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেওয়ার পর তার এ মন্তব্য আসে।
এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “বিডিপি দরখাস্ত দাখিল করেছে, আর অন্যরা বলছেন যে তারা (জামায়াত) অন্য নামে দিয়েছেন। সেটা তো প্রমাণের বিষয়। আগে হোক, যাচাই বাছাই হোক, তখন বলা যাবে।”
নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন নতুন দল নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করলে ৯৩টি দল সম্প্রতি আবেদন করে। এর মধ্যে বিডিপিসহ অন্তত দুটি দল নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর দলছুটদের নিয়ে গঠিত বলে আলোচনা চলছে।
তাদের নিবন্ধন না দিতে বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দপ্তরে স্মারকলিপি দেয় প্রজন্ম ৭১। এ সংগঠনের সভাপতি আসিফ মুনীর পরে বলেন, “বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি নিবন্ধনের আবেদন করেছে, তাতে আমরা শঙ্কিত।”
“যাদের কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত আছে জামায়েত ইসলামীর সাথে এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের আদর্শের সাথে, সে রকম কোনো ব্যক্তি যদি দল গঠন করেন এবং নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন, তাদের যাতে নিবন্ধন না দেওয়া হয়।”
আসিফ মুনীর বলেন, “নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী তদন্ত করবেন। কোন কোন যুক্তিতে নিবন্ধন না দেওয়া যেতে পারে সেগুলোর আওতায় যদি কোনোভাবে আসে, শুধুমাত্র বাংলাদেশ ডেভেলোপমেন্ট পার্টি নয়, অন্য কোনো দল যদি থাকে তাদের, নিবন্ধন যাতে না দেওয়া হয়।"
প্রজন্ম ৭১ এর প্রচার সম্পাদক অনল রায়হান বলেন, “মিডিয়ার খবর অনুযায়ী বাংলাদেশ ডেভোলোপমেন্ট পার্টির সভাপতি ও সেক্রেটারি জামায়েতের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। তারা জামায়েত ইসলামীর শুরা সদস্য ছিলেন এবং আছেন। সংগঠনের যারা সদস্য, তারা কখনো না কখনও জামায়েত ইসলামীর সাথে ছিলেন। ছাত্রশিবিরের সাথে ছিলেন।
“জামায়াতের নিবন্ধন যখন বাতিল হল, তখন আমরা সবাই জানতাম জামায়াত নতুন ফ্রন্ট খুলবে। নতুন চেহারা নিয়ে আসবে।"
নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেওয়ার সময় প্রজন্ম ৭১ এর সাইফুদ্দিন আব্বাস, নুজহাত চৌধুরী ও তানভীর হায়দায় চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
পরে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “প্রজন্ম একাত্তর স্মারকলিপি দিয়েছে গেছে। আগে দেখব, জানব, তারপর বলতে পারব। জামায়াত অন্য আদলে আসছে কিনা, তা অগ্রিম বলা ঠিক হবে না। কমিশন মিটিংয়ে ফরমালি না এলে বলা যাবে না। এগুলো প্রমাণ হোক, তারপর আমরা পাঁচ কমিশনার বসে সিদ্ধান্ত নেব।”
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। যেহেতু নিবন্ধন নেই, নির্বাচনে তারা আসতে পারবে না। এখন নতুন করে তারা কীভাবে আসছে না আসছে এগুলো খতিয়ে না দেখে বলা যাবে না।”
ইসিতে আবেদন, জামায়াত প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন বিডিপি নেতা
এবার যারা নিবন্ধনের আবেদন করেছে, আগামী বছর জুনের মধ্যে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শিগগিরেই যাচাই বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানান তিনি।
“আমরা কেবল একটি দল নয়, ৯৩টি পার্টির ব্যাপারেই যাচাই-বাছাই যতখানি আইনি কঠামো আছে পুরোটাই দেখব।”
রাশেদা সুলতানা বলেন, “গঠনতন্ত্র যাচাই করেই নিবন্ধন দেওয়া হবে। একজন এসে দাঁড়াল যে ‘আমরা একটা দল’, তাই কী হবে নাকি? যাচাই বাছাই করেই দেব।”