সাকিব কি বিএনএমে গিয়েছিলেন? কাদের বললেন, ‘আমি কিছু জানি না’

কাদের বলেন, "নির্বাচন সামনে রেখে রাজনীতিতে অনেক ফুল ফুটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এটা সম্পর্কে আমার জানা নেই।“

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2024, 08:48 AM
Updated : 19 March 2024, 08:48 AM

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভোটের আগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নতুন দল বিএনএমে যোগ দেওয়া নিয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই।

মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের টিকেটে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাগুরা-১ আসনের এমপি হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

তবে নির্বাচনের কিছুদিন আগে সাকিব ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া নতুন দল বিএনএমে যোগ দিয়েছিলেন বলে খবর এসেছে দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে।

সোমবার দৈনিক সমকালে একটি ছবি প্রকাশ করে বলা হয়, বিএনএম এর ফরম পূরণ করে সাকিব তুলে দেন হাফিজের হাতে। তবে এ বিষয়ে সাকিবের বক্তব্য জানা যায়নি।

মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। 

আওয়ামী লীগ থেকে এমপি হওয়া সাকিব এখনও বিএনএম এ আছেন কি না– সেই প্রশ্নে কাদের বলেন, "সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে ইলেকশন করেছে। জয়লাভ করেছে। পার্টির কাছে নমিনেশন চাওয়ার সময় সে পার্টির সদস্য।

"তার আগে তো সাকিব আমাদের পার্টির কেউ ছিল না। নির্বাচনে নমিনেশন নিতে হলে তাকে তো দলের প্রাইমারি সদস্য পদ নিতে হয়। সে শর্ত পূরণ করা দরকার সেটা সে করেছে। সেভাবেই আমরা মনোনয়ন দিয়েছি, সে এমপি হয়েছে নির্বাচনে। আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না।"

এদিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এদিন বনানীতে তার বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, নতুন দলে যোগদানের প্রস্তাব তার কাছে গেলেও তিনি তা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। ক্রিকেটার সাকিব তার কাছে এই ব্যাপারে গিয়েছিলেন। তিনি সাকিবকে এ ব্যাপারে কোনো উৎসাহ বা পরামর্শ দেননি।

নির্বাচনের আগে বিএনএম নিয়ে হঠাৎ তৎপরতা বাড়ায় দলটি আলোচনায় আসে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ওই দলকে ‘কিংস পার্টি’, ‘ভুঁইফোঁড়’সহ  নানা বিশেষণ দেন। 

২০০৭-০৮ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে হঠাৎ করে গড়ে ওঠা দলগুলোকে ‘কিংস’ পার্টি’ নামে ডাকা হত।

নির্বাচনের আগে সরকারই কিংস পার্টি তৈরি করেছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, "সরকারি দল কিংস পার্টি করতে যাবে কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে অনেক ফুল ফোটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এটা সম্পর্কে আমার জানা নেই। এটার রেজিস্ট্রেশন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। কোন দল কে রিকগনিশন করে এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই।"

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাদের বলেন, "আমরাও তো একটা দেশ। গণতন্ত্রের বিষয়ে আমাদেরও একটা মানদণ্ড আছে। পারফেক্ট কেউ না পৃথিবীতে। আমরাও পারফেক্ট এই দাবি আমরা করি না। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে নিশ্চিত প্রায় রিপাবলিকানদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী তিনি তো বলেছেন আমি ইলেক্টেড না হলে রক্ত বন্যা বয়ে যাবে। তাদের ওইটা কোনো নির্বাচন? “

বিরোধীদের অনুপস্থিতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের এবারের জাতীয় নির্বাচনে আগের তুলনায় সহিংসতা কম হলেও ‘মান ক্ষুণ্ন হয়েছে’ বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শনিবার প্রকাশ করা দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, " যুক্তরাষ্ট্রের গত নির্বাচন নিয়ে বিরোধীরা বলে যে সত্যিকারের নির্বাচন হয়নি। নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে সাবেক প্রেসিডেন্ট আজ পর্যন্ত মেনে নেয়নি। কাজেই মানদণ্ড কোথায় কি সেটা বোঝা হয়ে গেছে। আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার পর একুশ বছর ডিক্টেটরশিপ এবং তাদের সিবলিংস– এরাই বাংলাদেশে কর্তৃত্ব করেছে। একুশ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর গণতন্ত্রকে শৃঙ্খল মুক্ত করার জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছেন। এবং সেই সংগ্রামে আমরা বিজয়ী হয়েছি।"

সহযোগী সংগঠনগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি গঠন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, " যেসব সংগঠনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে সেগুলোর সম্মেলনের বিষয়ে আমরা চিন্তায় করব। তবে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার চূড়ান্ত মালিক হচ্ছে ওয়ার্কিং কমিটি। ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।"

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।