পাঁচ দিন চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পর হাসপাতাল থেকে বৃহস্পতিবার বিকালে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে ইনশাল্লাহ বিকাল ৩টার পর বাসায় ফিরে যাবেন ম্যাডাম। উনার যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে, তা পর্যালোচনা করে বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাসায় উনার চিকিৎসা চলবে।”
হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সাথে আছেন তার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি।
গত ২৯ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। পরে তাকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে তার চিকিৎসা চলে।
জাহিদ হোসেন বলেন, “উনার কিছু অসুস্থতা ছিল, কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। সেজন্য উনাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তির পরে চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে যে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, তাতে তিনি মোটামুটি রেসপন্স করেছেন।”
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা ও লিভারের রোগে ভুগছেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার নানা অসুস্থতা নিয়ে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
গত বছর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই বছরের অক্টোবরে হাই কোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর।
এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখনও পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদার দণ্ড স্থগিত করেন ছয় মাসের জন্য।
ওই বছরের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানে তার বাড়িতে রয়েছেন। প্রতি ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে পরিবারের আবেদনে।