ভোট নিয়ে আর প্রশ্নের সুযোগ থাকছে না: শেখ হাসিনা

“মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য আমরাই সংগ্রাম করেছি। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি।”

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2023, 04:31 PM
Updated : 8 Feb 2023, 04:31 PM

সংসদের সাম্প্রতিক উপ-নির্বাচন এবং রংপুর সিটি নির্বাচনে সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীরও হেরে যাওয়ার দিকটি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আর প্রশ্নের অবকাশ থাকছে না।

বুধবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন সংসদ নেতা।

শেখ হাসিনা বলেন, “মাত্র কয়েকদিন আগে ছয়টি উপ-নির্বাচন হল। একটিতে জাতীয় পার্টি জিতেছে। একটিতে বিএনপির একজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করেছিলেন, তারপর তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হয়ে আজ সংসদে এসেছেন।”

জোটের শরিকদের জন্য আসন ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “তাছাড়া একটা আমরা দিয়েছিলাম রাশেদ খান মেননকে, সেখানে জাতীয় পার্টি জিতে এসেছে। হাসানুল হক ইনুকে দিয়েছি বগুড়ায়, সেটা জিতে এসেছে। বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই সিট নৌকা মার্কা জয়লাভ করেছে।”

সংসদ থেকে বিএনপির পদত্যাগের কারণে গত ১ ফেব্রুয়ারি ছয়টি আসনে উপ-নির্বাচন হয়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তিনটি আসনে প্রার্থী দেয়; বাকি দুটি আসন জোট শরিক জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টিকে ছেড়ে দেয় এবং একটি আসনে প্রার্থী না দিয়ে উন্মুক্ত রাখে।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে রংপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হয় জাতীয় পার্টির প্রার্থী।

সেই নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সে ইলেকশনে কিন্তু জাতীয় পার্টি জয়লাভ করেছে, আওয়ামী লীগ হেরে গেছে। কাজেই নির্বাচন যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুষ্ঠু হয়, অবাধ নিরপেক্ষ হয় সেটাই কিন্তু এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।

“আমি আশা করি, এরপরে আর কেউ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা উত্থাপন করার সুযোগ পাবে না। কারণ আমরা ক্ষমতায় থাকলেও মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য আমরাই সংগ্রাম করেছি। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি।”

ভূমিকম্প দুর্গত তুরস্কে সহায়তা পাঠানোর বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু হৃদয় আছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় সহায়তার জন্য বাংলাদেশ থেকে মেডিকেল টিম, ওষুধ, শুকনা খাবার পাঠানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।”

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রাষ্ট্রপতি হিসেবে এ ভাষণটাই বোধহয় তার শেষ ভাষণ। কারণ আমাদের সংবিধান অনুযায়ী কেউ পরপর দুইবারের বেশি রাষ্ট্রপতি থাকতে পারেন না।

“রাষ্ট্রপতি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি শুরু করেন। রাষ্ট্রপতি হিসাবে সফল ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমি মনে করি, তিনি অত্যন্ত প্রাণবন্ত রাষ্ট্রপতি হিসাবে তার সময়ে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছেন এবং ভাষণ দিয়ে গেছেন।”

আবদুল হামিদ স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার হিসাবেও সংসদকে প্রাণবন্ত রেখেছিলেন বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। সংসদ নেতার বক্তব্যের পর রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।