“রাজনৈতিক আলোচনা দেশে হোক, বিদেশে হোক করবে- এটা তাদের অধিকার। তবে দয়া করে ষড়যন্ত্র-সন্ত্রাস করবেন না”, আহ্বান তার।
Published : 28 Aug 2023, 08:12 PM
সিঙ্গাপুরে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কিছু নেতার ‘বৈঠকের’ খবর দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আশা করছেন, সেখান থেকে সহিংসতার কোনো সিদ্ধান্ত যেন না আসে।
তার আহ্বান, “রাজনীতি করেন, দয়া করে ষড়যন্ত্র করবেন না। রাজনীতি করেন, দয়া করে সন্ত্রাস করবেন না।”
সোমবার বিকালে ঢাকার রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আইইবির শোক দিবসের আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “আজকে বিএনপি নেতারা দলবেঁধে গেছেন সিঙ্গাপুরে, আবার শুনেছি জাতীয় পার্টির এক গ্রুপও গেছে। ভালো, আলাপ আলোচনা করুক। রাজনৈতিক আলোচনা দেশে হোক, বিদেশে হোক করবে- এটা তাদের অধিকার।
“রাজনীতি করেন দয়া করে ১৩/১৪ সালের মতো আগুন নিয়ে বাস পোড়ানো, মানুষ পোড়ানো, রাস্তা পোড়ানো, গাছ পোড়ানো এই রাজনীতি থেকে বিরত থাকুন।”
গণআন্দোলন গড়তে না পারলে লাভ নেই মন্তব্য করে কাদের বলেন, “আজকে মঈন খান বললেন, ‘তারেক রহমানকে আওয়ামী লীগ সরকার ভয় পায়’। কেমন সাহসী মানুষ? রাজনীতি আর করবেন না এমন মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গেলেন লন্ডনে। আন্দোলনের ডাক দেয়, টেমস নদীর ওপার থেকে। মনে হয় তার ডাকে বঙ্গোপসাগরের সব জল ঢাকা শহর সয়লাব করে দেবে, এত সোজা নয়।
“বঙ্গবন্ধুর ডাকে ৬৯ এর গণবিস্ফোরণ সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নেতৃত্ব দিয়েছে। আর রিমোট কট্রোলে লন্ডন থেকে ফরমায়েশ দিলেন আর বাংলাদেশের সব লোক আন্দোলনে যোগ দিচ্ছে। কি, ডিসেম্বরের ১০ তারিখে দেশ চালাবে খালেদা জিয়া, বলে ছিল না। আর ১১ তারিখে তারেক জিয়া আসবে? কি হল সেই আন্দোলনের। এর মধ্যে আন্দোলন কি হল, নয়া পল্টন থেকে আন্দোলন গোলাপবাগের গরুর হাটে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল। সেই যে হোঁচট খেল সেই আন্দোলনের আর খবর নাই।”
কাদের বলেন, “জনগণ যেই আন্দোলনে নেই, সেই আন্দোলন পৃথিবীর কোথাও সফল হয়নি, বাংলাদেশেও নেতাকর্মী নিয়ে অতিরিক্ত পোশাক নিয়ে আসার জন্য মির্জা ফখরুল কত অনুরোধ করলেন।
“সমাবেশের নামে লাঠিসোঁটা কম্বল নিয়ে পিকনিক করলেন, জনগণ যোগ দিল না তাদের ডাকে। নেতাকর্মীরা আন্দোলন করল, সেই আন্দোলন সফল হল না। গণআন্দোলন ছাড়া কোনো আন্দোলন পৃথিবীর কোথাও সফল হয় না, বাংলাদেশেও হবে না, এটাই স্বাভাবিক।”
বিএনপি আবারও সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “খবর আছে, পাবলিক যখন আসবে না, এবার আপনারা সন্ত্রাসের পথে যাচ্ছেন। কানাডার আদালত ইতোমধ্যে রায় দিয়েছেন পাঁচজনের বেলায়।”
তার ভাষ্য, রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে যাওয়া ওই পাঁচজনের বিষয়ে কানাডার ফেডারেল আদালত তাদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
“এদের দল একটা গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কাজেই এদেরকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া যাবে না। মার্কিন হোম সিকিউরিটির লিস্টেও এ দেশের সন্ত্রীসী জাতীয়তাবাদী, তাদের নাম আছে।”
বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র গিলে খাবে বলে দাবি ওবায়দুল কাদের বলেন, “আবার যদি আসতে পারে, এই দেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। কোনো ভালো মানুষ বাঁচতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের কোনো অস্তিত্ব তারা রাখবে না। নিশ্চিহ্ন করে দেবে মুক্তিযোদ্ধাদের, নিশ্চিহ্ন করে দেবে বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশকে যারা রক্ষা করেছে তাদের।
“এই অপশক্তি সাম্প্রদায়িকতার সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল। এই বিএনপি সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক। এদের হাতে ক্ষমতা গেলে বাংলাদেশেকে পাকিস্তান বানাবে।”
শোক সভায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের সভাপতি আবদুস সবুর সভাপতিত্ব করেন।