“মাজা ভাঙ্গা বিএনপি আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে? তাদের দৌড়ও শেষ, খেলাও শেষ,” বলেন মায়া।
Published : 14 Nov 2023, 10:32 PM
ভোটকে সামনে রেখে সহিংসতা করলে রাজপথেই জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ১৪ দলের নেতারা।
মঙ্গলবার কামরাঙ্গীরচরে শহীদ মিনার মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন এ জোট আয়োজিত শান্তি সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি আসে।
বিএনপি-জামায়াতকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “তারা নাকি বাংলাদেশকে দেখিয়ে দিবে কত দূর পালিয়ে যেতে পারে সরকার। আমরা পালাইনি, পালিয়েছেন আপনারা। আমরা পালাইনি, আপনারা গর্তে লুকিয়েছেন। এই সরকার পালাবে না।
“শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আগামী দিনে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই দেশের উন্নয়ন ও প্রগতির ধারাকে এগিয়ে নিবে। এই দেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থেকে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যাবে।”
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে সামনে রেখে হুমকি আসছে উল্লেখ করে মেনন বলেন, “তফসিল ঘোষণা করলে নির্বাচন কেন, কোনও সাধারণ জীবন যাপন করাই না কি সম্ভব হবে না- তারা হুমকি দিয়েছেন।
“গত ২৮ তারিখের পর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত অবরোধ-হরতালের নামে গাড়ি পোড়াচ্ছে, মানুষ পুড়িয়ে মারছে, রাস্তাঘাটে মানুষকে আক্রমণ করছে। সে প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে আজকের জনসভা গুরুত্বপূর্ণ।"
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে বিএনপির সেই আয়োজন ভণ্ডুল হয়ে যায়। সেদিন অনুমতি ছাড়াই সমাবেশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানায় জামায়াতে ইসলামী। তবে সহিংসতার ঘটনায় বিএনপির শীর্ষনেতারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে মাঠে আর তাদের নেতাকর্মীদের দেখা যাচ্ছে না।
বিএনপি-জামায়াত ২৯ অক্টোবরের পর আর রাজপথে নেই উল্লেখ করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, “মাঝে-মধ্যে ঝটকা আক্রমণ করে। তাদের হয়ে যে পশ্চিমা প্রভু ধমক দিত, আমাদের বলতো যদি এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হয়, তাহলে তারা আমাদের উপর ভিসা নীতি, স্যাংশনের প্রয়োগ হবে। এইভাবে ধমকি দিত।
“কিন্তু গতকাল থেকে দেখলাম ঘটনা পালটে গেছে। এখন তারা চিঠি নিয়ে ঘুরছে। সে চিঠি হচ্ছে- না ঠিক আছে শর্তহীন সংলাপ কর। ওই শর্তহীন সংলাপ করতে হলে প্রথমেই বিএনপি ও তার সহযোগীদের এক দফা পরিত্যাগ করতে হবে। যে এক দফা দিয়ে তারা সরকারের পদত্যাগ চেয়েছে।"
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, “আজকে একদিকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বলব- সাবধান হয়ে যাবেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তি বিএনপি-জামায়াত তার বিরুদ্ধেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে ওই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করব।"
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, “আজকে যেই শক্তি আবার দেশের উন্নয়নকে থামিয়ে দিতে চায়, আবার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চায়, নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়, আবার যারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে, বাংলাদেশকে পিছনে নিয়ে যেতে চায়; এই একাত্তরের ঘাতকদের বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের বিরুদ্ধে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের মোকাবেলা করবে।"
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য মোফাজ্জল হোসেন মায়া বলেন, “২৮ তারিখে বিএনপি বলেছে- আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা আর সরকারে থাকবে না। ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। ২৮ তারিখে ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে, পুলিশ হত্যা করে, বিচারপতির বাড়িতে হামলা করেছে। অ্যাম্বুলেন্স জ্বালাই দিছে।
“ওইদিন বাংলার জনগণ তাদের তাদের ধাওয়া দিছে, তাতে মাজা ভাঈঙ্গা গেছে। এই মাজা ভাঙ্গা বিএনপি আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে? তাদের দৌড়ও শেষ, খেলাও শেষ।”
বিএনপি কখনও গণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতায় আসেনি দাবি করে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, “তাই তারা গণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতায় আসা শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তারা গোলাম আযম, নিজামীদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়ে প্রমাণ করেছে তারাই দেশের পরাজিত শক্তি।
“কোভিড ও রাশিয়া যুদ্ধের কারণে দেশের মানুষ সাময়িক অসুবিধায় আছে, তবে কেউ না খেয়ে থাকে না। শেখ হাসিনা সরকার মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করে দিয়েছে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে উন্নতি এবংভূমিহীনদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বিভিন্ন ভাতা দিয়ে যাচ্ছে।"