শুক্রবার সকালে রাজধানীর উত্তরায় ৭ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচন বর্জনে লিফলেট বিতরণ করেন রিজভী।
Published : 22 Dec 2023, 01:39 PM
বিএনপি ও তার মিত্ররা আসন্ন নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করছে- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বক্তব্যকে ‘গণবিরোধী তৎপরতা’ হিসেবে দেখছে বিএনপি।
৭ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচন বর্জনের পক্ষে শুক্রবার সকালে রাজধানীর উত্তরায় লিফলেট বিতরণ শেষে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে বক্তব্য প্রচার করছে তা সঠিক নয়। গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছেও এই একতরফা নির্বাচন আজকে পরিষ্কার হয়ে গেছে। এহেন অবস্থায় জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নব্য রাজাকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিপক্ষে সরকারের কলাবরেটর হিসেবে কাজ করছে। এটা গণবিরোধী তৎপরতা। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এহেন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।"
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেইসবুক পাতায় দুটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, যেখানে দেশে ট্রেনে চলমান নাশকতার জন্য বিএনপি ও এর মিত্রদের দায়ী করা হয়েছে।
নাগরিক ও রাজনৈতিক সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি তাদের সমমনাদের একটি অংশ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য 'অবরোধের তৈরি প্রচেষ্টা জোরদার করেছে' বলেও অভিযোগ করা হয়েছে তাতে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির সমালোচনা করে রিজভী দাবি করেছেন, দেশের ৬৩টি রাজনৈতিক দল এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ 'এই একতরফা ডামি নির্বাচন বর্জন করেছে, নির্বাচন’ প্রত্যাখ্যান করেছে।
'সাজানো নির্বাচনের ফলাফল ইতিমধ্যে গণভবনে তৈরি করে রাখা হয়েছে জানিয়ে রিজভী সবাইকে ভোট বর্জনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “দেশপ্রেমিক জনগণকে আহ্বান জানাই, আপনারা এই ডামি নির্বাচন বর্জন করুন, কেউ ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে যাবেন না, অন্যকেও যেতে বারণ করুন।”
বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা, পথচারী, রিকশা চালক, শ্রমজীবী মানুষের হাতে বিএনপির লিফলেট তুলে দেন রিজভী।
এ সময় মহানগর বিএনপি উত্তরের নেতা মোস্তফা জামান, হারুনুর রশীদ খোকা, রিপন হাসানসহ আনান্য নেতারা ছিলেন।
‘একতরফা’ ভোট বর্জনে জনমত গড়ে তুলতে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো বৃহস্পতি থেকে শনিবার- তিনদিন লিফলেট বিতরণ করবে। এরপর ঘোষণা অনুযায়ী রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ করবে তারা।
রিজভী ছাড়াও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর নেতৃত্বে পেশাজীবী নেতারা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে তোপখানা রোডে পথচারী, রিকশা চালক-সিএনজি চালক ও যাত্রীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেন।
এর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়ান পেশাজীবীরা।
এই সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক জাহিদ হোসেন সরকারের প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, “নিজেরা পদত্যাগ করে আপনাদেরকে অনুরোধ করছি, দেয়ালের লিখন পড়তে শিখুন, জনগণের কথা শুনুন, ডামি নির্বাচনের আয়োজন বন্ধ করুন।”
জিয়া পরিষদের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুতফুর রহমান, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের লুৎফুল কবির লাবু, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের রাশেদুল হকসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন:
ট্রেনে নাশকতা: বিএনপি ও মিত্রদের দায়ী করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি