কেউ না খেয়ে নেই: কাদের

কাদের বলেন, “আমরা আশা করি সামনের রমজানেও জিনিসপত্র এভেইলেবল থাকবে।"

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2024, 08:22 AM
Updated : 27 Feb 2024, 08:22 AM

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও দেশের কোনো মানুষ ‘না খেয়ে নেই’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনগণ ‘অনেক ভালো আছে’।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের বলেন, "অর্থনীতিতে যখন সংকট হবে তখন দ্রব্যমূল্য, বাজার ওঠানামা করে। ওঠানামা করাটা বাজারের ধর্ম। অপেক্ষা করেন, আপনাদের তো না খাইয়ে রাখেনি, দেশের মানুষ খেতে পারছে। একটা মানুষও না খেয়ে মরেনি। দেশের মানুষ অনেক ভালো আছে।"

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সরকারবিরোধী অসন্তোষের আশঙ্কা করছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, "আমাদের দেশের জনগণ প্রমাণ করেছে. এত উসকানি, এত আন্দোলনেও ওই পিকনিক পার্টি সমাবেশের নামে জনগণকে প্রলুব্ধ করতে পারেনি। দেশের মানুষ প্ররোচিতও হয়নি। দেশের জনগণ সারা বিশ্বের খবর রাখে। সারা বিশ্বের সব খবর নিয়ে গ্রামে চায়ের দোকানে রীতিমতো গবেষণা হয়। মানুষ বোঝে, এখানে (দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি) সরকারের দোষ নেই।“

মূল্যস্ফীতি নিয়ে অনেক দেশকেই যে ভুগতে হচ্ছে, সে কথা তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “সারা দুনিয়াতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। পৃথিবীর একটা দেশ দেখান যেখানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক অবস্থায় আছে। তবে আমাদের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা এখনো আছে। আমরা আশা করি সামনের রমজানেও জিনিসপত্র সহজলভ্য থাকবে।"

‘চাঁদাবাজির কারণে গরুর মাংসের দাম বাড়ছে’ এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে কাদের বলেন, "চাঁদাবাজি একটা বিষয় অবশ্যই আছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠিন বক্তব্য রেখেছেন। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। একটা বিষয় শুরু হলে রাতারাতি বন্ধ হয়ে যাবে এমন তো ভাবার কোনো কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রী বলার পর সবাই নড়েচড়ে বসেছেন।“

যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফর ঘিরে সাংবাদিকদের প্রশ্নে কাদের বলেন, “তারা আমেরিকা ফিরে গিয়ে কী বলবে এ নিয়ে স্পেকুলেশনের কোনো প্রয়োজন কি আমাদের আছে? আমরা বুঝব কী বলে গেছেন। আমেরিকায় গিয়ে কী বলবেন সে সব নিয়ে এত মাথা ঘামানোর কোন প্রয়োজন তো আমাদের নেই। দেখুন, একটা কথা বলে রাখি, আমরা বিদেশি বন্ধুর সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই, বন্ধুর পরিবর্তে যারা প্রভুর ভূমিকায় আসতে চান, সেই প্রভূর দাসত্ব আমরা মানি না। এটাই আমাদের পররাষ্ট্র নীতি।"

যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে সফর করেছে শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত। এই সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছে এ প্রতিনিধি দল।

বিএনপির সাথে মার্কিন প্রতিনিধি দল বৈঠক করলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক না করার বিষয়টি ‘সংকট’ হিসেবে দেখা হচ্ছে কি না– এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, "আওয়ামী লীগ কোনো সংকটের কথা বলেনি, কেন বলবে?  এখন তারা মূলত এসেছে সরকারের সাথে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে।

"তাদের (বিএনপি) সঙ্গে বৈঠক করেছে তাদের মতামত বা পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের কি ওপিনিয়ন, তাদের কি ভিউজ, সেটা জানাটা তারা (মার্কিন প্রতিনিধি দল) যৌক্তিক মনে করেছে। সে কারণে বৈঠক করেছে। তারা তো আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সেও তো আমাদের দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টার সাথে কথা বলেছে, কাজেই এখানে কোনো ঘাটতি আছে এটা আমরা মনে করছি না।"

বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, " তারা (বিএনপি) বলেছিল নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হলে পাঁচ দিনও সরকার টিকবে না। তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যা চায়, ওয়াশিংটনের কাছে যা চায়, সেই চাওয়াটা পাওয়া হয়নি। তারা শুনতে চেয়েছিল সরকারের উপরে নিষেধাজ্ঞা আসবে।

গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন কি না জানতে চাইলে কাদের বলেন, "ঋণ পরিশোধ করতে হবে। বিশ্ব সংকটের কারণে সারা দুনিয়াতেই এখন অর্থ সংকট প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসময় ঋণ আগের তুলনায় বাড়তে পারে কিন্তু বাংলাদেশ এ যাবত ঋণ খেলাপি হওয়ার কোনো রেকর্ড রাখেনি। আমরা সে ব্যবস্থা করছি। আমরা ঋণ খেলাপি থাকব না এটুকু বলতে পারি।"

অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, উপ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ দপ্তর সায়েম খান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।