মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে বিএনপি চেয়ারপারসনকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল।
Published : 11 Dec 2023, 11:06 PM
প্রায় তিন ঘণ্টা ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসা দেওয়ার পর খালেদা জিয়াকে আবার কেবিন নেওয়া হয়েছে।
সোমবার রাত ৮টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে কেবিনে ফেরত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
এর আগে বিকালে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
তখন তিনি বলেন, উনার একটু শারীরিক জটিলতার কারণে সিসিইউতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। চিকিৎসা শেষে আবার উনাকে কেবিনে শিফট করা হবে।
ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চার মাস ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খালেদা জিয়া। এ সময়ে কয়েক দফায় তাকে কেবিন থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল।
তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসার পাশাপাশি বিদেশ থেকেও চিকিৎস এসে তার চিকিৎসা দিচ্ছেন।
গত ২৫ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হামিদ আহমাদ আবদুর রব, ইন্টারভেনশনাল অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস এবং হেপাটোলজির অধ্যাপক জেমস পিটার হ্যামিলটন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় এসে পর দিন জুররিভাবে তার লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোরটোসিসটেমিক সান্ট (টিপস) সম্পন্ন করেন।
খালেদার জন্য আসা বিদেশি চিকিৎসকরা কাজ শুরু করেছেন
খালেদাকে বিদেশে নিতে ফের আবেদন, ‘যাচাই-বাছাই’ করছে আইন মন্ত্রণালয়
এরপর থেকে খালেদা জিয়া কেবিনেই ছিলেন। সেখানে চিকিৎসকরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে তার চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। সোমবার বিকালে কিছু জটিলতা দেখা দিলে আবার তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
গত ৯ অগাস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। লিভার জটিলতা, কিডনি সমস্যা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন তিনি।
এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন বলে জানান অধ্যাপক জাহিদ।
খালেদার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি করা হচ্ছে।
গত অক্টোবরে মেডিকেল বোর্ড সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার লিভারের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। দ্রুত বিদেশে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে তার লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে।
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং দেশের বাইরে না যাওয়ার শর্তে ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়।
খালেদা জিয়া বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পাবেন, আশা ফখরুলের
খালেদার কিছু হলে সরকার হবে ছারখার: নজরুল
বিদেশে চিকিৎসা: যেভাবে আপিল করতে পারবেন খালেদা
সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বৃদ্ধি করে সরকার। এরপর তাকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়েছিল তার পরিবার। কিন্তু সরকার সে আবেদনে সাড়া দেয়নি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলে আসছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার ক্ষমতাবলে সরকার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে তাকে সাময়িক মুক্তি দিয়েছিল। সেটা চলমান থাকা অবস্থায় তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই।
এখন খালেদা জিয়া কারাগারে ফিরে গিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করতে পারেন। কিংবা দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছেও ক্ষমার আবেদন করতে পারেন বলে আইনমন্ত্রীর ভাষ্য।