ডান-বাম চিন্তার বাইরে নতুন মধ্যপন্থি রাজনীতির গোড়াপত্তন, বাংলাদেশের স্বার্থের রাজনীতি ও স্বনির্ভর পররাষ্ট্র নীতির কথা বলছেন শুক্রবার আত্মপ্রকাশ হতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলের সংগঠকরা।
Published : 28 Feb 2025, 01:43 AM
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের বাঁক বদলে দেওয়া জুলাই আন্দোলনের আকাঙ্খায় দেশ গঠনের লক্ষ্য নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটছে শুক্রবার।
তারুণ্যের শক্তিতে উদ্দীপ্ত গণ আন্দোলনের মূল নেতাদের সামনের সারিতে রেখে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’ নামের এই রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচনের রাজনীতিকেই লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছে।
শুক্রবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদকে সামনে রেখে নতুন দলের ঘোষণাপত্র পাঠ করার ঘোষণা এসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃত্বে থাকাদের উদ্যোগে গঠিত হতে যাওয়া নতুন এ দলের সংগঠকদের কাছ থেকে।
সদস্য সচিব হিসেবে এনসিপির হাল ধরতে যাওয়া আখতার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তারুণ্যের নেতৃত্বে ডান-বাম চিন্তার বাইরে এসে একটি মধ্যপন্থি রাজনীতির সূচনার কথা আমরা বলেছি। বাংলাদেশের স্বার্থের রাজনীতির কথা আমরা বলছি, একটি স্বনির্ভর পররাষ্ট্র নীতির কথা বলছি।”
তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে যে অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্ন আছে, সেই প্রশ্নগুলো কীভাবে রাজনীতির মাধ্যমে আদায় করা যায় সেই প্রচেষ্টা থাকবে তাদের।
“যতগুলো মত ও পথ আছে সবাইকে একটা জায়গায় সমাধানের কথা আমরা বলেছি। সেটা হচ্ছে মানুষের নাগরিক পরিচয়, নাগরিক অধিকারের পরিচয় এবং নাগরিক মর্যাদার প্রশ্নে সর্বোচ্চ অবস্থান। এই জায়গার মধ্য দিয়ে যতগুলো মত ও পথের মানুষ আছে তাদেরকে আমরা একত্রিত করব।”
এনসিপির আহ্বায়ক হিসেবে থাকছেন দুদিন আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ ছেড়ে আসা তরুণ ছাত্রনেতা নাহিদ ইসলাম; তার নামই চূড়ান্ত হয়েছে।
দলটির সদস্য সচিব হিসেবে থাকছেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আখতার হোসেন।
তরুণদের রাজনৈতিক দলের অন্যতম উদ্যোক্তা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আখতার হোসেনের গড়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতৃত্বে গঠিত একটি প্ল্যাটফর্ম, যেটির বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্বে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনের রূপ নিয়েছিল।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ছিলেন ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দল গঠন ও গণঅভ্যুত্থানের শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ রেখে অভ্যুত্থানের আকাঙ্খা বাস্তবায়নে গত ৮ সেপ্টেম্বর ৫৫ সদস্যের জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করেছিল। পরে তিন ধাপে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৮৭ জনে উন্নীত করা হয়।
দল গঠনের প্রস্তুতি হিসেবে এই কয়েক মাসে সারাদেশে ১৫৯টি থানা কমিটি, ২৭৩টি উপজেলা কমিটি, ১৫টি মহানগর ওয়ার্ড কমিটি এবং ১০টি পেশাজীবী শাখা ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
এখন এসব কমিটির প্রায় ৪০ হাজার কর্মীর সামনে দুটি সুযোগ খোলা আছে। তারা চাইলে নাগরিক কমিটিতে থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সচেতনতার কাজ করতে পারেন। আবার চাইলে শুক্রবার ঘোষণা হতে যাওয়া রাজনৈতিক দলের অংশ হতে পারেন।
উদারপন্থি, ইসলামপন্থি, ডানপন্থি, বামপন্থি এবং রাষ্ট্রের সংস্কারপন্থিদের সম্মিলন ঘটিয়ে একটি মধ্যপন্থি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছেন নাগরিক কমিটির নেতারা।
পুরোটা সময় দল গঠনের প্রস্তুতি সুশৃঙ্খলভাবে গুছিয়ে নিলেও শেষ দিকে এসে ছন্দপতন ঘটে। পদ ও নেতৃত্ব নিয়ে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কিছুটা টানাপোড়েন প্রকাশ্যে আসে।
দল ঘোষণার আগের রাতেও ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ও ‘সম্মানজনক’ পদ প্রত্যাশী সতীর্থদের মধ্যে কিছুটা স্নায়ুবিক ও মনস্তাত্বিক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
দলের আদর্শ কেমন হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “এখানে থাকবে মধ্যম পন্থা, এখানে থাকবে বাংলাদেশ পন্থা, এখানে থাকবে নাগরিক হয়ে উঠার চেষ্টা। বাঙালি-বাংলাদেশি এই ধরনের বিভাজনকে আমরা সামনে আনতেই চাই না “
নেতৃত্বে কারা থাকছেন?
জাতীয় নাগরিক কমিটির একাধিক শীর্ষ নেতা বলেছেন, দলের সম্ভাব্য নাম হতে পারে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি। বৃহস্পতিবার দফায় দফায় বৈঠক করে তারা এ নাম ঠিক করেছেন। এই নামে ফেইসবুক পেইজও খোলা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
শুক্রবার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে দলের অন্তত দেড়শ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।
সদ্য সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক ও আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব করে এনসিপি রাজনীতির মাঠে নামছে।
দলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের নামও প্রায় চূড়ান্ত। হাসনাত ও সারজিস দুইজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ঘনিষ্ট ছিলেন। আহ্বায়ক কমিটিতে হাসনাতকে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও সারজিসকে উত্তরাঞ্চলের সংগঠকের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে।
নতুন দলে মুখ্য সমন্বয়কারী হিসেবে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে রাখার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ফেডারেশনের কর্মী থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছিলেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। পরে এই দল ছেড়ে তিনি যোগ দিয়েছিলেন এবি পার্টিতে। সেখানে ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা।
জাতীয় নাগরিক কমিটির দায়িত্ব পালনকালে নানা শ্রেণি পেশা ও চিন্তার সম্মিলন ঘটানোর পেছনে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে কর্মীরা মনে করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন আব্দুল হান্নান মাসুদ। কমিটিতে সবচেয়ে কম বয়সী এই নেতা গত ছয় মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন, টিভি টকশোতেও তাকে সরব দেখা গেছে। নতুন রাজনৈতিক দলে তাকে যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এর বাইরে কোনো একটি শাখার প্রধানও করা হতে পারে মাসুদকে।
দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, তাসনীম জারা, দপ্তর সম্পাদক মুনীরা শারমিনের নাম এসেছে। এই পদে আলী আহসান জুনায়েদ ও রাফে সালমান রিফাতকে নিয়ে আসার চেষ্টাও চলছে, যারা ইতোমধ্যে দলে আসতে চান না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের গোপন কমিটির সাবেক এই দুই সভাপতি নানা কারণে দল গঠন প্রক্রিয়ায় গত ১৫ দিন ধরে নিষ্ক্রিয়। দলে তাদের ফিরে না আসার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত। একদিন আগে ফেইসবুকে তারা সেই ঘোষণাই দিয়ে রেখেন। যদিও জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাদের দলে আনার চেষ্টা অব্যাহত থাকার কথা বলেছেন অন্য নেতারা।
নতুন দলের সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম আদিবের নাম আলোচনায় আছে। নুরুল হক নূরের নেতৃত্বাধীন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
আদিব ছাড়াও ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী নুসরাত তাবাসসুমকে এই পদে রাখার প্রস্তাব এসেছে। এই পদে আরও বিচেনায় আছেন অবিভক্ত গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব আতাউল্লাহ।
ছাত্রনেতাদের মধ্যে ‘রাষ্ট্রচিন্তার’ এর নেতা ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য তরিকুল ইসলাম, সালেহ উদ্দিন সিফাতসহ আরও কয়েকজনকে নতুন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হতে পারে বলে সংগঠকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
রাজনৈতিক দল গঠন বিষয়ে নুসরাত তাবাস্সুম সাংবাদিকদের বলেন, “নারী নেতৃত্বকে আলাদা করে দেখার ব্যাপার নয়। জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের মানুষ দেখেছে যে, নারীরা প্রয়োজনের সময় কীভাবে সামনে এসে হাল ধরতে পারে। নেতৃত্বের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নারীরা ছিল আছে এবং সামনের দিনেও থাকবে।
“দেশ পুনর্গঠন ও বিনির্মাণে নারী-পুরুষ কারও জায়গা কম না। নতুন রাজনৈতিক দল অন্য যেকোনো প্ল্যাটফর্ম থেকে নারীদের ভূমিকা এবং অবস্থান নিশ্চিত করার ব্যাপারটা বেশি ভালোভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রক্ষা করবে।”
আগে ঘোষণাপত্র পরে গঠনতন্ত্র
অভিষেক বা আত্মপ্রকাশের দিন গঠনতন্ত্র প্রকাশ না করে সেই দায়িত্ব আহ্বায়ক কমিটির ওপর ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন নেতারা। তবে এদিন দলের পক্ষ থেকে একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে।
এরইমধ্যে আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রের বিষয়ে টিম কাজ করছে।
সদস্য সচিব হিসেবে নতুন দলের হাল ধরতে যাওয়া আখতার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যৌথ সভায় শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছি। দেড়শ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির মধ্য দিয়ে আমরা আত্মপ্রকাশ করব। সারাদেশের সব ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গের মানুষ আমাদের আহ্বায়ক কমিটিতে থাকবে।”
গঠনতন্ত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, “আহ্বায়ক কমিটিতে একটি গঠনতন্ত্রের খসড়া করা হবে। পরে যখন কমিটি ফরমেশন হবে তখন ভোটাভুটির মাধ্যমে গঠনতন্ত্র ঠিক করা হবে।”
জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে তিন বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের থেকে যতদ্রুত সম্ভব সারাদেশে সংগঠনের বিস্তার ঘটানো। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেতে যে ধরনের শর্তাবলী প্রয়োজন সেগুলো পূরণ করতে সক্ষম হব বলে আমরা মনে করি।”
আখতার বলেন, “আমরা বাংলাদেশে নতুন সংবিধানের প্রত্যাশা করি। সেই নতুন সংবিধানের জন্য একটি গণপরিষদ নির্বাচনের আলাপ আমরা দীর্ঘদিন ধরে দিয়ে আসছি। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে ধরনের নির্বাচনই হোক না কেন আমরা সেই নির্বাচনে জেতার জন্য আমাদের দলের পক্ষ থেকে সারাদেশে যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজে নেব।
“যারা দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতি চর্চার মধ্য দিয়ে এসেছেন এবং নিজেদের ইমেজকে স্বচ্ছ রাখতে পেরেছেন, এই রকম মানুষদেরকে আমরা খুঁজছি। তাদেরকে নিয়ে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।”
দল গঠন প্রক্রিয়ায় শেষ মুহূর্তে বিভক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সদস্য সচিব বলেন, যারা ‘অভিমান’ করে দূরে সরে আছে তাদের ফেরাতে তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করে যাবেন। এমনকি দল গঠনের পরেও তাদের নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন।
রূপান্তর প্রক্রিয়া
এদিকে দল ঘোষণা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির ফেইসবুক পেইজেও পৃথক বার্তা দেওয়া হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন দল গঠিত হওয়ার পর পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বর্তমান আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠক দায়িত্ব নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করবেন। বর্তমানে দায়িত্ব থাকা ব্যক্তিরা তাদের দায়িত্ব নতুনদের কাছে হস্তান্তর করবেন। নতুন নেতৃত্ব পরবর্তীতে তাদের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন নির্বাহী কমিটিতে কারা থাকবেন, সেল ও সম্পাদকীয় পদগুলোতে কারা থাকবেন।
“নতুন দলে বর্তমান অনেক সদস্য চলে যাওয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটি নতুন করে পুনর্গঠন করা হবে। দলে যোগ দিচ্ছেন না, এমন সদস্যদের সদস্যপদ বহাল থাকবে। জাতীয় নাগরিক কমিটি পুনরায় নতুন উদ্যোমে তার নিজস্ব কার্যক্রমে ফিরে যাবে। দল গঠনের পর থেকে কমিটি সিভিল-পলিটিক্যাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবেই থেকে যাবে। আর কোনো দল গঠনের উদ্যোগ নেবে না।
“এছাড়া, আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জনগণের স্বার্থে জাতীয় নাগরিক কমিটি সর্বদা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাবে।”
জাতীয় নাগরিক কমিটি বলেছেন, উপজেলা, থানা, ওয়ার্ডে তাদের যে প্রতিনিধি কমিটিগুলো গঠিত হয়েছিল এবং পেশাজীবিদের নিয়ে যে উপকমিটি বা প্রতিনিধি কমিটি হয়েছিল সেসব কমিটির যে সকল সদস্য আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া রাজনৈতিক দলে যুক্ত হতে ইচ্ছুক, তারা নাগরিক কমিটি থেকে রাজনৈতিক দলে কোন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে সেটি দ্রুত সময়ের মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হবে।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথি হচ্ছেন যারা
এনসিপির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অবদান রাখা সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, কূটনীতিক, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বলে দলের পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদসহ বেশ কয়েকজন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন।
পরে বাইরে এসে মাসুদ সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের দাওয়াত গ্রহণ করেছেন এবং শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বলেছেন, সব রাজনৈতিক দল মিলেমিশেই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে। সবাই একসাথে যেন দেশের জন্য কাজ করতে পারে তিনি সেই পরিবেশ উপহার দেবেন।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের কাছে আমরা আমাদের চিঠি পৌঁছাব। পাশাপাশি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও গণতন্ত্র মঞ্চ এসব দলকে সরাসরি চিঠি পৌঁছানোর চেষ্টা করব। আর আমাদের বিভিন্ন টিম বিভিন্ন জায়গায় দাওয়াত নিয়ে কাজ করছে।”
আরও পড়ুন
নতুন দলের নাম জাতীয় নাগরিক পার্টি, নেতৃত্বে নাহিদ-আখতার
বৈষম্যবিরোধী ও নাগরিক কমিটির নতুন দলের আত্মপ্রকাশ শুক্রবার
দল গড়তে সরকার ছাড়লেন উপদেষ্টা নাহিদ
সরকারের চেয়ে রাজপথে বেশি ভূমিকা রাখতে পারব: নাহিদ
অভ্যুত্থানের 'নায়কদের' সামনে রেখে হচ্ছে নতুন দলের আহ্বায়ক কমিটি