জাসদ নেতারা মনে করেন, ”শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের নামে যা করা হয়েছে, তা শেখ হাসিনার অপশাসনকেই আড়াল করবে।”
Published : 10 Feb 2025, 12:12 AM
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙার ঘটনায় ‘তীব্র নিন্দা’ জানিয়ে দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছে বাংলাদেশ জাসদ।
রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে শনিবার বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ এর জাতীয় কমিটির সভায় নেতারা এই নিন্দা ও দাবি তুলেছেন বলে দলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
তারা ‘শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের নানা ধরনের উসকানিমূলক কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা’ জানান।
বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান জাতীয় কমিটির এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
রোববার পাঠানো দলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় বেশ কিছু প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, “বিক্ষোভের নামে একটি চিহ্নিত মহল কর্তৃক গত ৫ ফেব্রুয়ারি স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক স্মারক বঙ্গবন্ধু ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া ও সারাদেশে বিভিন্ন বাসভবন, স্থাপনা, বাণিজ্যিক ভবন, ম্যুরাল ও ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেওয়াসহ চরম নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খল কার্যকলাপে জাসদ গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।”
জাসদ নেতারা বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও ঐক্য নস্যাৎ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এসব ন্যাক্কারজনক কাজ করা হয়েছে বলে আমাদের ধারণা।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের নামে যা করা হয়েছে, তা শেখ হাসিনার অপশাসনকেই আড়াল করবে এবং নতুন নামে ফ্যাসিবাদ পুনরুজ্জীবনের পথ উন্মুক্ত করবে।
“আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস পরে, যখন সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্য সৃষ্টির কাজ চলছে, তখন হঠাৎ দেশব্যাপী চালানো এ নৈরাজ্য ও ধ্বংসযজ্ঞের হোতাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”
ভারতে আশ্রয় নেওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন।
তার সেই বক্তব্যের সমালোচনায় জাসদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের নানা উসকানিমূলক কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
“পতিত আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব জুলাই-অগাস্ট গণহত্যার দায়দায়িত্ব শুধু অস্বীকারই নয়, তার জন্য আন্দোলনকারীদেরকেই দায়ী করছে। তাদের শাসনামলের সব অপকর্মের সাফাই গাইছে।”
এতে বলা হয়, “পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ্য করছি ভারতের এক শ্রেণির রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক আওয়ামী লীগের এ অপকর্মে মদদ দিচ্ছে।
“আমরা জুলাই-অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে পুরনো ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন ও নতুন ফ্যাসিবাদের উদ্ভব প্রতিরোধ এবং একটি গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার জন্য যুক্তফ্রন্টে ঐক্যবদ্ধ হওয়া আহ্বান জানাচ্ছি।”
সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন, এটিএম মহব্বত আলী, নুরুল আলম মন্টু, রফিকুল ইসলাম খোকন, আবদুল কাদের হাওলাদার, করিম সিকদার, মনজুর আহমেদ মনজু, নাসিরুল হক নবাব ও আনোয়ারুল ইসলাম বাবু অংশ নেন।