“আগে একটা পদ্ধতি ছিল জিও-এনজিও কো-অর্ডিনেশন। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কো-অর্ডিনেশন। সেটাকে আবার রিভাইভ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে”, বলেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা।
Published : 29 Aug 2024, 09:15 PM
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার যে ‘সংস্কারের’ উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার প্রক্রিয়া চালু রাখব, তাদের কাছ থেকে সংস্কার প্রস্তাব যা আসবে সেগুলো গ্রহণ করব। সে ব্যাপারে একটা পদ্ধতির বিষয়ে কথা হয়েছে।”
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিনদিন পর ৮ অগাস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব বুঝে নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ।
প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে এই সরকারকে স্বাগত জানানো হলেও গত ২৪ আগস্ট থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন প্রশ্নে ‘অতি দ্রুত’ সংলাপের দাবি করতে থাকেন। অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারের কথা বলছে, সে প্রসঙ্গে সেদিন তিনি বলেন, ‘অল্প কিছু মানুষের সংস্কারে’ তিনি বিশ্বাস করেন না।
পরদিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে ড. ইউনূস তার সরকারের যে কর্ম পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, সেখানে নির্বাচন প্রশ্নে কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ছিল না।
'যারা ভোটে জিততে পারবে না, তারা এসব বলে': জামায়াত আমিরকে ফখরুল
‘কয়েকজন ব্যক্তির সংস্কারে’ বিশ্বাস নেই, নির্বাচন নিয়ে অতি দ্রুত সংলাপ চান ফখরুল
'ইউনূসের সংস্কার' নিয়ে ধোঁয়াশায় ফখরুল, ভোট নিয়ে আলোচনা দাবি
এর প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল গত সোমবার ঢাকায় এক আলোচনায় বলেন, ‘‘এখনও আমি ধোঁয়াশায়, যে অবস্থাটা সেটা আমার পরিষ্কার হয়নি। আমরা আশা করেছিলাম যে, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়, তিনি একটা রোডম্যাপ দেবেন… সেই রোডম্যাপ আমরা কিন্তু ‘ট্রানজিশন টু ডেমোক্রেসি’, এটা আমরা কিন্তু উনার বক্তব্যের মধ্যে পাইনি।
“রিফর্মসের কথা বলেছেন, সেই রিফর্মগুলো কোন কোন বিষয়… সেটারও কিছু কিছু তিনি আভাস দিয়েছেন… আমি জানি, সেগুলো এই অল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব না।”
বুধবারও সংবাদ সম্মেলনে এসে একই ধরনের কথা বলেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, “সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে, আমাদের লড়াইটা গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য। সেটার জন্যই তো নির্বাচন। এটা তো আমাদের অধিকার। আমরা তো নির্বাচনের জন্যই এতদিন লড়াই করেছি, সংগ্রাম করে এসেছি।”
সংস্কার প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি যদি মনে করি, একজন ব্যক্তি একেবারে স্বর্গ বানিয়ে দিতে পারবে- আমার ওই চিন্তাটা সঠিক হবে না। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে দেশ কীভাবে চলবে।”
উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, “আমরা দায়িত্ব গ্রহণের সময় থেকে এক মাসের মধ্যে কোন কোন মন্ত্রণালয়, কী কী কাজ করেছে, সরকার কী কাজ করেছে সেগুলোর ব্যাপারে একটা নোট প্রস্তুত করে আপনাদেরকে দিয়ে দেব।“
বৈঠকে সরকারি ও বেসরকারি খাতে অংশীদারত্ব নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, “আগে একটা পদ্ধতি ছিল জিও-এনজিও কো-অর্ডিনেশন। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কো-অর্ডিনেশন। সেটাকে আবার রিভাইভ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের কিছুক্ষণ পরই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে বিএনপি নেতা বলেন, তাদের বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা আশাবাদী এই অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্বে আছেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস, তাদের আন্তরিকতা, দেশপ্রেম ও যোগ্যতা দিয়ে খুব দ্রুত তারা দেশকে একটা স্টেবল অবস্থায় নিয়ে আসতে পারবেন এবং একই সঙ্গে তারা নির্বাচনের দিকেও যেতে পারবেন। প্রয়োজনীয় সংস্কারসমূহ পূরণ করবেন বলে আমরা মনে করি।”
নির্বাচনের কোনো সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা কোনো তারিখ নিয়ে আলোচনা করিনি। আমরা কোনো তারিখ বলব না। এটা উনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) বলবেন।”