Published : 28 Feb 2023, 12:08 PM
রাজনীতির মাঠে ও নানা কর্মসূচিতে মুখোমুখি অবস্থান নিলেও এক অনুষ্ঠানে পাশাপাশি বসে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ‘এক সঙ্গে’ কাজ করার তাগিদ এসেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতাদের কাছ থেকে।
দলগুলোর নিজেদের মধ্যে সংলাপ ‘জরুরি’ বলেও মনে করছেন তারা।
রাজধানীতে সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘ইউএসএআইডির’ অর্থায়নে ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ’ (এসপিএল) প্রকল্পের এক অনুষ্ঠানে এক হয়েছিলেন দেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ‘সিনিয়র লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম’ নামের ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ‘ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল’।
এর আওতায় এই তিন রাজনৈতিক দলের ২৪ জন নেতাকে দুই পর্বে মোট ছয় দিন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতাদের ‘গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট’ দেওয়া হয়।
রাজনীতিবিদদের আরও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, “ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাদের একই অঙ্গনে নিজেদের প্রকাশ করার সুযোগ তৈরি করেছে। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খানের ভাষ্য হল, “ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বকারীদের মধ্যে যে ইতিবাচক সংলাপ শুরু হয়েছে এর তাৎপর্য অপরিসীম। তবে তারা যা শিখেছে তা প্রয়োগ করা উচিত।“
রাজনৈতিক দলগুলোকেও তাদের সদস্যদের উন্নয়নের সুযোগ দিতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নিজস্ব প্রশিক্ষণ সেল গড়ে তুলতে হবে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, “আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মধ্যে পারস্পরিক সংলাপ খুবই জরুরি। এই ধরনের প্রশিক্ষণ বৃহত্তর পরিসরে উপকারী হতে পারে।“
তার মতে, এ ধরনের আয়োজনে বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদরা পরস্পরের কাছাকাছি এসেছেন, এবং একে অপরের আস্থা অর্জন করেছেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে ‘ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল’ এর এসপিএল প্রকল্পের চিফ অব পার্টি ডানা এল ওল্ডস বলেন, “ফেলোশিপ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারী ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে আসা নেতাদের মধ্যকার সহযোগিতা ও সম্মিলিত উদ্যোগ এবং তাদের নিজেদের জেলার সাধারণ মানুষের জন্য এক সাথে কাজ করার বিষয়টি প্রমাণ করে যে, ইতিবাচক, জনমুখী রাজনীতি সম্ভব।”
ইউএসএআইডি বাংলাদেশের অফিস অব ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস এবং গভরনেন্স -এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মেধাউয়ি গিরি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের ২৪ জন রাজনৈতিক নেতাকে গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গ্র্যাজুয়েশন করা ফেলোরা বাংলাদেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের প্রগতিশীল সিনিয়র পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দক্ষতা বিকাশের লক্ষ্যে এই উচ্চমানসম্পন্ন কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে।“
এছাড়া ফেলোদের নিজ এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও তরুণ রাজনীতিকদের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে এই প্রোগ্রাম সহায়তা করে।
এ কর্মসূচির সপ্তম ক্লাসের গ্র্যাজুয়েশন করা ফেলোরা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা, দলীয় অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র, ক্যাম্পেইন ম্যানেজমেন্ট, ভোটদান প্রক্রিয়া এবং রাজনীতিতে নারীদের অন্তর্ভুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিবিড় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছেন।