বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আটকের পর সাংসদ ছবি বিশ্বাসকে হত্যাচেষ্টার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখাচ্ছে পুলিশ।
Published : 26 Dec 2014, 07:17 AM
রাজধানীর বকশীবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ ও সাংসদের ওপর হামলার ঘটনার একদিন পর তাকে গ্রেপ্তার করা হল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মাসুদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুক্রবার ভোরে গয়েশ্বর রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন এমপির ওপর হামলার ঘটনায় শাহবাগ থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।”
বুধবার রাতে দায়ের করা ওই মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুল আওয়াল মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবুন নবী খান সোহেল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারি হেলালসহ ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের আসামি করা হলেও সেখানে গয়েশ্বরের নাম ছিল না।
আর এমন এক সময়ে তাকে আটক করা হলো যখন গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ মাঠে খালেদা জিয়ার জনসভা নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি ঘোষণায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা চলছে।
গাজীপুরে খালেদার জনসভা ঠেকাতে ছাত্রলীগের হুমকির জবাবে বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর বলেন, “২৭ ডিসেম্বের আমরা গাজীপুর যাবই।... সেখানে আমাদের সমাবেশ করতে না দিলে সেদিন সারাদেশে সমাবেশ হবে। গাজীপুরে রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া হলে সারাদেশে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে।”
বিএনপি নেতা-কর্মীরা মামলার কারণে যে হয়রানিতে পড়েছেন, একদিন সেই পরিণতি আওয়ামী লীগকেও ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।
গয়েশ্বরের সহকারী আবদুল লতিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভোর ৬টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় এসে এই বিএনপি নেতাকে নিয়ে যায়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে।
খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে বুধবার বকশীবাজারে বিএনপি ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাসের ওপর হামলা চালিয়ে তার গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সাংসদ নিজে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এ ঘটনার জন্য বিএনপি ও ছাত্রদলকর্মীদের দায়ী করলেও বিএনপি তা অস্বীকার করেছে।
সংঘর্ষের পর বুধবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে শাহবাগ থানায় সাংসদকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়, যাতে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৫০/৬০ জনকে আসামি করা হয়।
আর সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ চকবাজার থানায় আরেকটি মামলা করে, যাতে ৭০ জন বিএনপি নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০/৪০ জনকে আসামি করা হয়।
সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ছাত্রলীগ কর্মীদের ছবি পরদিন বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলেও মামলায় সরকার সমর্থক এ ছাত্র সংগঠনের কেউ আসামি হয়নি।