জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ হঠাৎ করেই হাই কোর্টে এসে আইনজীবীর সঙ্গে ঘণ্টাখানেক বৈঠক করে গেলেন।
Published : 30 Nov 2014, 04:31 PM
প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ দূতকে রোববার দুপুরের দিকে তার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের চেম্বারে দেখা যায়।
এ নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে গুঞ্জন চললেও এরশাদের হাই কোর্টে আগমনের কারণ স্পষ্ট করেননি তার আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি উনার প্রিন্সিপাল ল’ইয়ার ঠিক আছে। তবে মামলার কোনো বিষয়ে তিনি আমার কাছে আসেননি।”
তাহলে কেন এসেছিলেন- এ প্রশ্নে সিরাজুল ইসলাম বলেন, “কোনো কাজেই নিশ্চয় এসেছিলেন। তবে আমার কাছে কোনো মামলার বিষয়ে আসেননি। এমনিতেই দেখা করতে এসেছিলেন।”
বেলা ১টার দিকে এই আইনজীবীর কক্ষে এসে ২টার দিকে বের হন এরশাদ। এরপর দ্রুত সুপ্রিম কোর্ট চত্বর ত্যাগ করেন।
এরশাদ কেন এসেছিলেন- প্রেস সচিব সুনীল শুভ রায়ও তা জানাতে পারেননি।
জাতীয় পার্টির এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এরশাদ সকালে বনানীর পার্টি অফিসে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই আদালত এলাকায় যান।
১৯৯০ সালে গণআন্দোলনের মুখে এরশাদ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় তিন ডজন মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে তিনটি মামলায় তার সাজার আদেশ হয় এবং একটিতে তিনি সাজা খাটা শেষ করেন।
গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে এরশাদ নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা দেন, তাতে এখনো আটটি মামলা থাকার কথা বলা হয়। বাকি মামলাগুলো থেকে তিনি খালাস বা অব্যাহতি পেয়েছেন, অথবা মামলার নিষ্পত্তি হয়ে গেছে বলে জানান।
এই আট মামলার মধ্যে চারটির কার্যক্রম উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত রয়েছে। মঞ্জুর হত্যাসহ তিনটি মামলা বর্তমানে চালু। আর রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে পাওয়া উপহার সামগ্রী আত্মসাতের অভিযোগে এক মামলা বর্তমানে হাই কোর্টে রয়েছে।
১৯৯১ সালের ৮ জানুয়ারি সেনানিবাস থানায় দায়ের করা এ মামলায় এরশাদের বিরুদ্ধে এক কোটি ৯০ লাখ ৮১ হাজার ৫৬৫ টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়। ১৯৯২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ওই মামলার রায়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত এরশাদকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়।
রায়ের বিরুদ্ধে এরশাদ ওই বছরই হাই কোর্টে আপিল করেন। পরে দুর্নীতি দমন কমিশনও এ মামলায় পক্ষভুক্ত হয়।
এ মামলায় দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলাটি আমার কাছেই রয়েছে। আমরা মামলাটি শুনানি করতে একবার আদালতে উপস্থাপনও করেছিলাম। কিন্তু এরপর আর এগোয়নি।”
এরশাদের আদালতে আসার সঙ্গে ওই মামলার কোনো সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন না দুদকের আইনজীবী।