বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রতীক গোলাম আযমের জানাজা ও দাফন হবে শনিবার।
Published : 24 Oct 2014, 07:35 PM
তার ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার জোহরের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে তার বাবার জানাজা হবে। তিনি নিজেই জানাজা পড়াবেন।
জানাজার পর শনিবারই মগবাজারে পারিবারিক কবরস্থানে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমকে দাফন করা হবে বলে জানান তার ছেলে।
আযমী জানান, বিদেশে অবস্থানরত তার পাঁচ ভাইয়ের কেউ শনিবারের মধ্যে দেশে পৌঁছাতে পারবেন না। তবে তাদের স্ত্রী সন্তানদের মধ্যে কেউ কেউ আসছেন। রাতে মগবাজারের বাসায় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত একটি লাশবাহী গাড়িতে তার মরদেহ রাখা হবে।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ৯০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযম সাজা ভোগের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ৯২ বছর বয়সী গোলাম আযমের আরও ৮৯ বছর কারাভোগ বাকি ছিল।
রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার সকালে পরিবারের সদস্যদের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়।
দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দলের নেতাকর্মীদের দেখার জন্য বাসার সামনে রাখা হয় জামায়াতের এই তাত্ত্বিক নেতার লাশ।
গোলাম আযমের আইনজীবী তাজুল ইসলাম আগের রাতেই জানিয়েছিলেন, গোলাম আযমের ‘শেষ ইচ্ছা’ অনুযায়ী মগবাজারে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফনের প্রস্তুতি চলছে।
সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া আযমী ওই সময় সাংবাদিকদের বলেন, “বাবার শেষ ইচ্ছা ছিল মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জানাজা পড়াবেন। কিন্তু তারা দুজনেই কারাগারে থাকায় জানাজা কে পড়াবেন, তা দলের নেতারা ও পরিবারের সদস্যরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
এর প্রতিক্রিয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম শনিবার বলেন, গোলাম আযমের জানাজায় ইমামতির জন্য কারাবন্দি মতিউর রহমান নিজামী বা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্যারোলে মুক্তি চাওয়ার কোনো ‘যৌক্তিকতা’ নেই।
এদিকে গোলাম আযমের লাশ তার পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাতে না নেওয়া হয় সেজন্য দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
পরে গোলাম আযমের প্রতি `ঘৃণা জানিয়ে' নবীনগর উপজেলা প্রেসক্লাব চত্বরে সমাবেশ করেন তারা।
শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে বাংলাদেশে দাফন না করে তার লাশ পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়ার দাবিও তুলেছে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরামসহ কয়েকটি সংগঠন। এ দাবিতে শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তারা মানববন্ধনও করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে দাফন করে অনেক রক্তের বিনিময়ে গড়া এই বাংলাদেশের মাটিকে ‘অপবিত্র’ করতে দেওয়া যায় না।